বাবাকে হত্যার তিন দিন আগেই গর্ত খুঁড়েছিলেন ছেলে

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৮ আগu ২০২৫ ০৭:১৩ অপরাহ্ণ   |   ৩৫ বার পঠিত
বাবাকে হত্যার তিন দিন আগেই গর্ত খুঁড়েছিলেন ছেলে

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:-



 

বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না কলেজপড়ুয়া জামিউল হক খান জিসান (২৩)। বারবার চেষ্টা করেও বাবা-মাকে আবার একত্র করতে ব্যর্থ হন তিনি। এতে বাবার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। শেষ পর্যন্ত বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন জিসান। লাশ গুমের জন্য বাড়ির পাশে তিন দিন আগেই খুঁড়ে রাখেন একটি গর্ত।
 

জামিউলের বাবা রাশিদুল হক খান সুমন (৪৭) ঘাটাইল উপজেলার সন্ধানপুর ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ধলাপাড়া বাজারে একটি ফার্মেসি চালাতেন। স্ত্রী জুলিয়া খানমের সঙ্গে বছরখানেক আগে বিচ্ছেদ হয় সুমনের। পরিবারে তখন ছিলেন কলেজপড়ুয়া ছেলে জিসান ও ১১ বছরের এক মেয়ে।
 

মামলার এজাহার অনুযায়ী, মাকে ফিরিয়ে আনতে বাবার কাছে বারবার অনুরোধ করতেন জিসান। কিন্তু বাবার অনীহার কারণে তা সম্ভব হয়নি। গত ২০ আগস্ট মাকে ফিরিয়ে আনার প্রসঙ্গে বাবার সঙ্গে তর্কে জড়ান তিনি এবং একপর্যায়ে মারধরের শিকার হন। এরপরই বাবাকে হত্যা করার পরিকল্পনা পাকাপোক্ত করেন জিসান। ফার্মেসি থেকে আগেই ২০টি ঘুমের ট্যাবলেট এনে ঘরে রাখেন তিনি এবং লাশ গুমের জন্য বাড়ির পাশেই একটি নির্জন স্থানে গর্ত খুঁড়ে রাখেন।
 

ঘটনার রাতে বাবার সঙ্গে একই ঘরে ঘুমান জিসান। রাত পৌনে ১২টার দিকে সুমন গ্যাসের ওষুধ চাইলে পানির সঙ্গে গ্যাস নিরাময়ের ট্যাবলেট দেন জিসান। তবে সেই পানিতে মিশিয়ে রাখেন ২০টি ঘুমের ট্যাবলেটও। কিছুক্ষণের মধ্যে গভীর ঘুমে ঢলে পড়েন সুমন, আর সেখানেই শেষ হয় তাঁর জীবন।
 

পরদিন দুপুর পর্যন্ত সুমন ঘুম থেকে না উঠলে প্রতিবেশীরা গিয়ে দেখেন তিনি মারা গেছেন। সবাই এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু ভেবে দাফন সম্পন্ন করেন। তবে পরবর্তী সময়ে জিসানের অস্বাভাবিক আচরণে সন্দেহ হয় দাদা বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক খানের (৮২)। জিজ্ঞাসাবাদে জিসান স্বীকার করেন, বাবাকে তিনি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করেছেন। বিষয়টি প্রকাশ পেলে স্থানীয়রা তাঁকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
 

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশাররফ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জিসান হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে।