বাছুর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি, ফটোসেশন আর খিচুড়ি: প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ   |   ৫৬৫ বার পঠিত
বাছুর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি, ফটোসেশন আর খিচুড়ি: প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

ঢাকা প্রেস,পাবনা (উত্তর) প্রতিনিধি:- 



বাছুর দেওয়ার কথা বলে ফটোসেশন, খিচুড়ি খাইয়ে বিদায়!

প্রকল্পের নাম: হতদরিদ্রদের মাঝে উন্নত জাতের গাভির বাছুর বিতরণ
বরাদ্দ: ৫ লাখ টাকা
সুফলভোগী: ১০ জন নারী

গাভির বাছুর বিতরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুঃস্থ নারীদের ডেকে এনে প্রশিক্ষণের নামে ফটোসেশন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের রেলবাজার এলাকার একটি এনজিও, মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থা, এ কার্যক্রম পরিচালনা করে।

 

গত ৩০ ডিসেম্বর, বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের (বিএনএফ) আর্থিক সহায়তায় ওই এনজিও প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। দশজন নারীর জন্য বাছুর বরাদ্দের কথা থাকলেও বাস্তবে খামার থেকে আনা বাছুরগুলো শুধুমাত্র ফটোসেশনের জন্য ব্যবহার করা হয়। প্রশিক্ষণ শেষে নারীদের খিচুড়ি খাইয়ে বিদায় দেওয়া হয়, আর বাছুরগুলো আবার খামারে ফেরত পাঠানো হয়।

 

খুশি খাতুন নামে এক নারী জানান, তাকে প্রশিক্ষণের জন্য ডেকে নিয়ে বাছুর হাতে ধরিয়ে ছবি তোলা হয়। পরে তাকে জানানো হয়, পরবর্তী প্রকল্পে বাছুর দেওয়া হবে। এর আগেও বাবলু নামের ওই এনজিও কর্মকর্তা তার কাছ থেকে একটি ছাগলের জন্য ১৩০০ টাকা নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
 

অন্য এক নারী জানান, ট্রেনিংয়ের পর বাছুর দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো কিছুই পাননি।

 

বাছুর পরিবহনের গাড়ির চালক শুভ দাস বলেন, মথুরাপুর এলাকার একটি খামার থেকে বাছুর আনা হয়েছিল এবং প্রশিক্ষণ শেষে আবার খামারে ফেরত দেওয়া হয়।

 

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী জানান, তিনি অনুষ্ঠানের দাওয়াত পেলেও উপস্থিত হতে পারেননি। প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত না জানালেও অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

বিএনএফ-এর উপমহাব্যবস্থাপক মোস্তফা কামাল ভূঞা বলেন, প্রকল্পের জন্য প্রথম কিস্তিতে ৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। সন্তোষজনক রিপোর্ট পেলে বাকি টাকা দেওয়া হবে। তবে ইউএনওর প্রত্যয়ন বাধ্যতামূলক।

 

মানবসেবা উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এম এস আলম বাবলু বলেন, প্রশিক্ষণে ১০ জন ছাড়াও আরও কিছু মানুষ অংশ নিয়েছে। দশজনকে বাছুর দেওয়া হয়েছে, বাকিদের পরবর্তী প্রকল্পে দেওয়া হবে। তার দাবি, কোনো অনিয়ম হয়নি।

 

স্থানীয় প্রশাসন ও বিএনএফ উভয়ই বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের প্রমাণ মিললে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।


এই ধরনের ঘটনা শুধু প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না, বরং দুঃস্থ মানুষের অধিকার ও আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রতারণা করে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সমাধান হওয়া প্রয়োজন।