গরমে ত্বকের যত্নে খুব একটা বিশেষ খেয়াল না রাখলেও চলে। এমনটাই ভাবা হতো এতদিন। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সে ভাবনাতেও চলে এসেছে বদল। এই আবহাওয়ায় বেশি হচ্ছে, ত্বকের এমন ৫ ধরনের সমস্যার সমাধান রইল
এবার গরমটা যেন একটু অন্য রকম। কিছুতেই কমছে না তেজ। গ্রীষ্মেও শীতের মতো ফেটে যাচ্ছে ঠোঁট, ত্বকে ধরছে টান। এমনই আরও নানা সমস্যা। ‘বাতাসে আর্দ্রতা এবার কম, যে কারণে শীতকালের সমস্যাগুলো গরমেও দেখা দিচ্ছে,’ বলছিলেন হারমোনি স্পার রূপবিশেষজ্ঞ রহিমা সুলতানা। রোদের অনেক বেশি তাপ থাকাও একটা কারণ। এ কারণেই ত্বকে বিশেষ কিছু সমস্যা হচ্ছে। জেনে নিন এসব সমস্যায় সহজ পাঁচটি সমাধান।
১. শীতের মতোই ঠোঁটের যত্ন
গরমে যে সমস্যা এবার প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে, তা হলো ঠোঁট ফাটা। এ সমস্যা দূর করতে শীতকালের মতোই ঠোঁটের বিশেষ যত্ন নিতে হবে। এ জন্য বাড়িতেই ১ টেবিল চামচ গ্লিসারিনের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। সঙ্গে রাখুন অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল। এ ক্ষেত্রে জলপাই তেলের পরিমাণও হবে ১ টেবিল চামচ। সব একসঙ্গে মিশিয়ে একটি বোতলে ভরে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে প্রতিদিন ঘরোয়া এই জেল ঠোঁটে ব্যবহার করতে পারেন। সব সময় ব্যাগে লিপবাম রাখুন। শুষ্কতা অনুভব করলেই জিব দিয়ে না ভিজিয়ে ঠোঁটে লিপবাম ব্যবহার করতে হবে।
২. নিয়মিত চাই ময়েশ্চারাইজার
গরমে ত্বকের যত্নে খুব একটা বিশেষ খেয়াল না রাখলেও চলে। তবে এবারের গরম তো একটু ভিন্ন রকম। শীতকালের মতোই ত্বক হয়ে উঠছে রুক্ষ ও শুষ্ক। তাই গোসলের পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার বেশ জরুরি হয়ে পড়েছে। গোসলের পর স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের আর্দ্রতা হারিয়ে যায়। এ জন্য ত্বক আরও টান টান হয়ে পড়ে। গোসলের পর ত্বক মুছে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে তা ত্বকের পানিটুকু ধরে রাখে। শুধু শুষ্ক ত্বকেই নয়, এ মৌসুমে তৈলাক্ত ত্বকসহ সব ধরনের ত্বকেই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেছে নিতে পারেন ওয়াটার বেজড ময়েশ্চারাইজার। এ ধরনের ময়েশ্চারাইজার একটু ঘন হয়ে থাকে। আর ড্রাই বা শুষ্ক ত্বকের জন্য বেছে নিন অয়েল বেজড ময়েশ্চারাইজার। অয়েল বেজড ময়েশ্চারাইজার কিছুটা সফট বা নরম হয়ে থাকে। দিনে দুবার এ ময়েশ্চারাইজারের ব্যবহার করতে হবে। দ্বিতীয়বার ব্যবহার করতে হবে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে।
৩. হাত ও পায়ের যত্নে
হাত ও পায়ের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন জলপাই তেল। মুখের ত্বকের মতো একইভাবে গোসলের পর ও ঘুমাতে যাওয়ার আগে হাত ও পায়ে এই তেল মাখতে পারেন। জলপাই তেলে যাঁদের অ্যালার্জি, তাঁরা হাতে বানানো নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। কারণ, নারকেল তেল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে বেশ কাজে দেয়।
৪. নিয়মিত আট গ্লাস পানি পান
গরমে শরীরে যাতে পানির ঘাটতি না হয়, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, গরমে ঘামের কারণে শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। ত্বক শুষ্ক হওয়ার এটাও অন্যতম কারণ। এ জন্য দৈনিক আট গ্লাস পানি পান করতে হবে। এ ছাড়া টাটকা ফলের রস ও ডাবের পানি নিয়মিত খেতে পারেন। ঠোঁট, ত্বক বা গলার ভেতরে শুষ্কতা অনুভব করলেই দ্রুত পানি পান করতে হবে।
৫. নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার
বাইরে থেকে ঘরে ফিরেই ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। ত্বক পরিষ্কারের জন্য ডাবের পানি ব্যবহার করতে পারেন। সব সময় হাতের কাছে ডাবের পানি পাওয়া না গেলে আরেকটা কাজ করতে পারেন। ডাবের পানি ফ্রিজে কিউব আকারে সংরক্ষণ করুন। বাইরে থেকে বাড়িতে ফিরেই মুখে ডাবের পানির বরফের টুকরা ঘষে নিন। এতে ত্বকের রোদে পোড়া ভাব বা সানবার্ন দূর হবে। এ ছাড়া গরমে মুখে নিয়মিত পানির ঝাপটা দিতে এ সময় ভুল হয় না যেন।