 
                            
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
ঢাকা প্রেসঃ
কুড়িগ্রামের চর রাজীবপুর উপজেলায় দলবদ্ধ ধর্ষণের জেরে বিষপানে আত্মহত্যার পর গৃহবধূর পরিবারের কাছ থেকে চিকিৎসার ব্যয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা নিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আনোয়ার হোসেন। এ সময় ধর্ষণের ঘটনা আড়াল রাখার কথা বলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের জন্য পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ফাঁকা স্টাম্পে স্বাক্ষর নেন ওই জনপ্রতিনিধি।
গতকাল শনিবার বিকেলে কাছে এসব অভিযোগ করেন মারা যাওয়া নারীর শ্বশুর। তিনি বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় সঠিক বিচার না পেয়ে অভিমান করে তাঁর ছেলে ও ছেলের স্ত্রী বিষপান করেন। এরপর পুত্রবধূ মারা গেলে ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন, স্থানীয় বাসিন্দা আমেজ আলী ও গোলাম হোসেন তাঁকে ডাকেন। বড় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, ৪০ থেকে ৫০ জন মানুষ বসে আছেন। সেখানে পৌঁছালে ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ও তাঁর লোকজন তাঁদের ঘিরে ধরেন। তাঁরা চিকিৎসার খরচের জন্য ৫৬ হাজার টাকা ও লাশ কাটাছেঁড়া (ময়নাতদন্ত) না করে দাফনের জন্য আরও কিছু টাকাসহ ১ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে সে টাকা ইউপি সদস্যকে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী নারীর শ্বশুর আরও বলেন, পরবর্তী সময়ে পরিবার থেকে তাঁরা যেন মামলা করতে না পারেন, সে জন্য ফাঁকা স্টাম্পে তাঁর দুই ছেলের (মারা যাওয়া নারীর স্বামী ও ভাশুর) স্বাক্ষর নিয়ে রাখেন ইউপি সদস্য আনোয়ার। এ সময় তাঁকে সহযোগিতা করেন স্থানীয় বাসিন্দা আমেজ আলী, গোলাম হোসেন ও আকবর হোসেন। তিনি বলেন, ‘টাকা দেওয়ার পরেও লাশ পোস্টমর্টেম করল। এখন আমি ওই টাকা ফেরত চাই। ইউপি সদস্য ফাঁকা স্ট্যাম্পও ফেরত দেয় না, টাকাও দেয় না। আমার ছেলের বউ তো মইরাই (মরে) গ্যাছে, টাকাটা পাইলে অসুস্থ ছেলেটার চিকিৎসা করাতে পারমু।’
গত শনিবার বিকেলে এই প্রতিবেদকের কাছে ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ফাঁকা স্টাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ওই গৃহবধূ ও তাঁর স্বামীকে রাজীবপুর ও জামালপুরে চিকিৎসা করাতে অনেক টাকা খরচ হয়েছিল। সেই খরচ বাবদ এক লাখ টাকা চাওয়া হয় এবং সে জন্য স্টাম্পে সই নেওয়া হয়েছিল। একজন ইউপি সদস্য হয়ে কেন ফাঁকা স্টাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছেন, তা জানতে চাইলে তিনি চুপ থাকেন। তবে গতকাল বিকেলে রাজীবপুর থানার ওসির কক্ষে তিনি বলেন, তিনি স্ট্যাম্পে নয়, বরং সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছিলেন। পরে কাগজটি ছিঁড়ে ফেলেছেন।
 
                                                
                                                 
                                        
                                        
                                     
                                        
                                        
                                     
                                        
                                        
                                     
                                        
                                         
                                        
                                        
                                    