ঢাকা প্রেস-নিউজ ডেস্ক:-
বাংলাদেশের নতুন আয়কর আইনে করদাতাদের জন্য ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) বা টিআইএন সার্টিফিকেট বাতিল করার সুযোগ রাখা হয়েছে। আগে এমন কোনো নিয়ম ছিল না, ফলে অনেকেই অপ্রয়োজনীয় টিআইএন নিয়ে বিপাকে পড়তেন। তবে এখন নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ সাপেক্ষে কর কর্মকর্তার অনুমোদন নিয়ে টিআইএন বাতিল করা যাবে।
নতুন আয়কর আইনে ছয়টি কারণে টিআইএন বাতিলের আবেদন করা যাবে—
১. যাদের আর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা নেই।
২. মৃত্যু, অবসায়ন, অবলুপ্তি বা অনুরূপ কারণে অস্তিত্বহীন হয়ে গেলে।
৩. স্থায়ীভাবে বিদেশে চলে গিয়ে দেশে আয় না থাকলে।
৪. ভুল বা ডুপ্লিকেট নিবন্ধন পাওয়া গেলে।
৫. আইনি মর্যাদায় পরিবর্তন হলে।
৬. অন্য কোনো আইনানুগ কারণ থাকলে।
যেসব করদাতার আয় করযোগ্য সীমার নিচে, তারা টিআইএন বাতিল করতে পারবেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে করযোগ্য আয়ের সীমা হলো—
সাধারণ করদাতার জন্য: ৩,৫০,০০০ টাকা
নারী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য: ৪,০০,০০০ টাকা
প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের করদাতার জন্য: ৪,৭৫,০০০ টাকা
গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য: ৫,০০,০০০ টাকা
এছাড়া—
পূর্বে কর দেওয়ার প্রয়োজন থাকায় টিআইএন নেওয়া হলেও বর্তমানে আয় কমে গেলে বাতিল করা যাবে।
কোনো করদাতা মৃত্যুবরণ করলে তার উত্তরাধিকারীরা আবেদন করতে পারবেন (ব্যবসা-সংক্রান্ত জটিলতা না থাকলে)।
বিদেশে কর্মরত থেকে দেশে করযোগ্য আয় না থাকলে টিআইএন বাতিল করা যাবে।
একাধিক টিআইএন থাকলে বা তথ্যভ্রান্তি হলে বাতিল ও সংশোধনের প্রয়োজন হবে।
বর্তমান টিআইএন সার্টিফিকেটের প্রিন্ট কপি
জাতীয় পরিচয়পত্র ও তার ফটোকপি
পরপর তিন অর্থবছরের শূন্য রিটার্ন দাখিলের স্বীকৃতি পত্র
১. তিন বছর শূন্য রিটার্ন দাখিল: পরপর তিন অর্থবছরে শূন্য রিটার্ন জমা দিতে হবে। প্রতিবার রিটার্ন জমা দেওয়ার পর পাওয়া স্বীকৃতি পত্র সংরক্ষণ করতে হবে।
২. কর সার্কেল অফিসে আবেদন: তৃতীয় বছরের রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় টিআইএন বাতিলের আবেদন করতে হবে। এ সময় উপ-কর কমিশনার বরাবর একটি লিখিত আবেদন জমা দিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে।
৩. প্রতিনিধি মারফত আবেদন: আবেদনকারীর পক্ষে অন্য কেউও আবেদন জমা দিতে পারবেন।
টিআইএন বাতিল প্রক্রিয়ায় সরকারের কোনো ফি নেই। অর্থাৎ এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা যাবে।
আবেদন জমা হলে কর কর্মকর্তারা কারণসমূহ যাচাই করবেন। কোনো বকেয়া কর না থাকলে এবং শর্ত পূরণ হলে টিআইএন সার্টিফিকেট বাতিল হয়ে যাবে। পরবর্তীতে প্রয়োজনে নতুন টিআইএন নেওয়া যাবে।
আগে টিআইএন বাতিলের নিয়ম না থাকায় অনেকেই সমস্যায় পড়তেন। এখন নতুন আয়কর আইনের কারণে করদাতারা প্রয়োজন ফুরালে টিআইএন বাতিল করতে পারবেন। শর্তগুলো পূরণ করে নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় আবেদন করলেই সহজে টিআইএন সার্টিফিকেট বাতিল করা সম্ভব।