গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে স্ত্রীর কোমরে শিকল পরিয়ে বাড়ির পিলারের সঙ্গে তালা দিয়ে বেঁধে রাখার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারি ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামে।
শিকলবন্দি ওই নারীর নাম নাসরিন বেগম (২৪)। তিনি আলীপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের স্ত্রী এবং একই ইউনিয়নের বাহারা গ্রামের ওসমান শেখের মেয়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, নাসরিন একটি বেঞ্চে বসে আছেন, তার কোমরে পরানো শিকল তালা দিয়ে একটি পিলারের সঙ্গে আটকানো। পাশে তার স্বামী আব্দুর রহমান ও সন্তানরা। চারপাশে স্থানীয়দের ভিড়।
ঘটনার পেছনে রয়েছে পারিবারিক কলহ ও পরস্পরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ।
নাসরিন জানান, ২০১৩ সালে সামাজিকভাবে আব্দুর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের তিনটি সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি স্বামী আব্দুর রহমান অন্য নারীদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন—এমনটি জানতে পেরে নাসরিন টিকটকে আইডি খুলেন। এরপর থেকেই তাকে গালাগাল ও মারধর করতেন স্বামী। সর্বশেষ ২৫ ফেব্রুয়ারি বেধড়ক মারধরের শিকার হয়ে স্বামীর সংসার ত্যাগ করে তিনি বোনের বাসায় ওঠেন এবং সেখান থেকে খুলনায় চলে যান।
নাসরিনের অভিযোগ, খুলনায় থাকার পর শনিবার তার ভাই মিটল শেখকে দিয়ে তাকে ফের বাড়িতে নিয়ে আসেন আব্দুর রহমান এবং কোমরে শিকল পরিয়ে ঘরের পিলারের সঙ্গে বেঁধে রাখেন।
অন্যদিকে, আব্দুর রহমানের দাবি, তার স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িত এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি বাড়ি ছাড়ার সময় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা সঙ্গে নিয়ে যান। এছাড়া নাসরিনের নামে ব্যাংকে আরও অর্থ রয়েছে, যা উত্তোলনের প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানান তিনি। তাই তাকে ফিরিয়ে এনে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন, তবে রাতে শিকল খুলে দেওয়া হয়।
নাসরিনের বোন আসমা বেগম বলেন, "এর আগেও আমার বোনকে একাধিকবার মারধর করা হয়েছে। আজ বিকেলে পারিবারিকভাবে বসার কথা রয়েছে। প্রয়োজনে আমরা আইনের আশ্রয় নেব।"