কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:-
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের পাহাড়পুর-নূরপুর কবরস্থানে এক বিস্ময়কর ও ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে। ফজরের নামাজ শেষে মায়ের কবর জিয়ারত করতে গিয়ে ছেলে দেখেন, কবরে গভীর গর্ত—কিন্তু দেহাবশেষ নেই। একই অবস্থা পাশের ভাতিজার কবরেরও।
সোমবার রাতের কোনো এক সময় ওই দুটি কবর থেকে মরদেহের কঙ্কাল চুরি হয়েছে বলে ধারণা করছে স্বজন ও এলাকাবাসী। ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নিহতদের স্বজনরা ছুটে আসেন, ভিড় জমে কবরস্থানে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। কবরস্থানের পাশের ভুট্টা ক্ষেত থেকে তারা দুটি হাড়ের টুকরো, কয়েকটি কাটার সরঞ্জাম ও একটি টাউজার জব্দ করেছে।
প্রায় দুই বছর আগে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান উপজেলার পশ্চিম নগর সাঁওতা গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী ছারা খাতুন (৮৫)। এক মাস পর মারা যায় তার নাতি রাতুল (১৪), যিনি জন্মগত শারীরিক প্রতিবন্ধী ছিলেন। দুজনকে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার ফজরের নামাজের পর ছারা খাতুনের ছেলে রইসুল বিশ্বাস কবর জিয়ারতে এসে দেখেন, মায়ের ও ভাতিজার কবরের মাঝখানে কুয়ার মতো গর্ত খোঁড়া হয়েছে, কিন্তু ভেতরে কোনো দেহাবশেষ নেই।
এলাকাবাসী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রইসুল বিশ্বাসের ছেলে রিজভী বিশ্বাস বলেন, "বাবা সকালে কবর জিয়ারত করতে গিয়ে দেখেন দাদি ও চাচাতো ভাইয়ের কবর খোঁড়া, ভেতরে কিছুই নেই। স্পষ্টতই কঙ্কাল চুরির ঘটনা ঘটেছে। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ করব।"
পশ্চিম নগর সাঁওতা গ্রামের মোতাহার উজ জামান জানান, "এমন ঘটনা আমাদের এলাকায় আগে কখনো ঘটেনি। এতে মৃতদের স্বজনরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।"
নূরপুর গ্রামের সামছুজ্জামান বলেন, "এটি খুবই দুঃখজনক ও ভয়ঙ্কর ঘটনা। কবরস্থানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন জরুরি।"
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান শেখ বলেন, "আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, এটি কঙ্কাল চুরির ঘটনা। আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত তদন্ত ও কবরস্থানের নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন।