সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে আলোচিত ‘পীর’ মো. মিজানুর রহমান ও তার জামাতা মো. আবু নাইমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকালে শ্যামনগরের নিজ আস্তানা থেকে তাদের আটক করা হয়।
এর আগে, প্রতারণা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে শংকরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিকুল ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মিজানুর রহমান শ্যামনগরের ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট অন্তাখালী গ্রামের মৃত দীনদার গাজীর ছেলে, আর আবু নাইম শরীয়তপুরের সখিপুর থানার মোল্যাবাজার গ্রামের নুরুল হুদার সন্তান। অভিযোগ রয়েছে, নিজেকে ওলি দাবি করে মিজান বহু মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেছেন।
সম্প্রতি মিজানকে ‘ভণ্ড’ আখ্যা দিয়ে তার আস্তানা ভেঙে ফেলার দাবিতে কয়েক শত মানুষ বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তবে পুলিশ ও সেনাবাহিনী উত্তেজিত জনতাকে থামিয়ে দেয়। পরে উপজেলা বাতিল প্রতিরোধ কমিটি ও উপজেলা ওলামা পরিষদের নেতারা মিজানকে আইনের আওতায় আনতে তিনদিনের সময় বেঁধে দেন।
মামলার বাদী সিদ্দিকুল ইসলাম জানান, মিজানের নির্দেশে তার জামাতা আবু নাইম ‘শরীয়তের মানদণ্ডে ওলিগণের হালত’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন, যাতে ইসলাম ধর্মের মূল বিশ্বাসের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হয়েছে।
এছাড়া, তিনি অভিযোগ করেন যে মিজান তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা ধার নিয়ে ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং টাকা চাইলে ‘মাওলা দিচ্ছে না’ বলে টালবাহানা শুরু করেন।
শ্যামনগর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবীর মোল্যা বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে মিজানুর রহমান ও আবু নাইমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিশেষ করে, আবু নাইমের সম্পাদনায় প্রকাশিত বিতর্কিত বইয়ের কারণে এই অভিযোগ আনা হয়।
এদিকে, ‘পীর’ মিজানের গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শ্যামনগরে সাধারণ মানুষের মধ্যে উল্লাস দেখা যায় এবং তারা আনন্দ মিছিল বের করে।