জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, তার দল হয়তো আগামী সরকার গঠন করতে না-ও পারে, তবে তারা এমন একটি রাজনৈতিক শক্তির সূচনা করেছেন যা আগামী কয়েক দশক ধরে দেশের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করবে।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাহিদ বলেন, ‘কেউই ভাবেনি যে অভ্যুত্থান ঘটবে, কিন্তু তা ঘটেছে। আমি আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করি, আমরা এবার বিজয়ী হতে চলেছি। তবে এই নির্বাচনই সবকিছু নয়। আমাদের লক্ষ্য হলো এই রাজনৈতিক শক্তিকে ৫০ বা ১০০ বছর কিংবা তারও বেশি সময় ধরে টিকিয়ে রাখা।’ আজ শুক্রবার তার এ সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়েছে।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রচলিত রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পরিবর্তনের তেমন কোনো আগ্রহ নেই। ‘যেসব সংস্কারের জন্য তরুণরা জীবন দিয়েছে, সেগুলো নিয়েও তাদের তেমন উদ্যোগ নেই। এ কারণেই আমরা একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এনসিপি নিজেকে একটি বৃহৎ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। নাহিদ বলেন, ‘আমরা নারীদের রাজনৈতিক অগ্রযাত্রায় যুক্ত করেছি এবং সব বর্ণ ও ধর্মের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেছি। আমাদের লক্ষ্য, প্রতিটি নাগরিক যেন তাদের ন্যায্য অধিকার পায়।’
জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দ্রুত জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়েছে, যাতে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে একটি সরকার গঠিত হতে পারে। কিন্তু নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হলেও তা সঠিক নয়। বাস্তবতা হলো, হাসিনার পতনের পর দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়।’
এনসিপির আরেকটি বড় লক্ষ্য হলো গণপরিষদ গঠন করা, যা বাংলাদেশের সংবিধানে কাঠামোগত সংস্কার এনে একটি স্থায়ী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। এ প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘আমরা এমন একটি রাজনৈতিক দল গড়ে তুলতে চাই, যেখানে সবাই অংশগ্রহণ করতে পারবে।’
গত বছরের জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন নাহিদ ইসলাম। হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে ড. ইউনূসের আমন্ত্রণে তিনি সেই সরকারের অংশ হন। তবে গত সপ্তাহে তিনি পদত্যাগ করে নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির নেতৃত্ব দেন। তরুণদের নিয়ে গঠিত এই দলটি ইতোমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।