দলকে জনআকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০১ মার্চ ২০২৫ ০৩:৪৩ অপরাহ্ণ   |   ৮৩ বার পঠিত
দলকে জনআকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত

ঢাকা প্রেস নিউজ

 

বিএনপিকে জনআকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য প্রস্তুত করা হবে। এর অংশ হিসেবে, দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের জনবান্ধব কর্মসূচি নিয়ে সক্রিয় হতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, দলের নীতি-আদর্শ এবং কর্মসূচি বাস্তবায়নে অবহেলা সহ্য করা হবে না। দুর্নীতি, অনাচার, গণবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে বিরত থাকতে দলের হাইকমান্ড কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে।
 

গতকাল শুক্রবার বিএনপির বর্ধিত সভায় এই সিদ্ধান্তগুলো ঘোষণা করা হয়। সভাটি সংসদ ভবনের এলডি হল-সংলগ্ন মাঠে সকাল থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা প্রকাশ করা হয়।

 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ঘোষিত "ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়" আদর্শের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকে, বর্ধিত সভা সৎ ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের যথাযথ মূল্যায়নের মাধ্যমে বিজয়ের পথে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করেছে। এতে ২০১৫ সালে খালেদা জিয়ার ভিশন-২০৩০ এবং ২০২৩ সালে তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখার আলোকে রাষ্ট্র সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে ফ্যাসিবাদবিরোধী দল ও সংগঠনগুলো কাজ করবে। সভা বলছে, যেসব সংস্কার প্রস্তাব নির্বাচনের আগে বাস্তবায়নযোগ্য, তা অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা উচিত, আর যেগুলো আইন বা সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন, তা নির্বাচিত সংসদে অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব করা হবে।

 

বর্ধিত সভা মনে করে, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচন মাধ্যমে জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। প্রায় দেড় যুগ ধরে জনগণ এই মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছে, এবং এর মেয়াদ আরও বাড়ানোর কোনো অজুহাত গ্রহণযোগ্য হবে না। সভা থেকে দাবি জানানো হয়, অবিলম্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানানো হয়।

 

বর্ধিত সভায় নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সরকারের কাছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়।

 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া সব দল এবং শ্রেণি-পেশার সংগঠনগুলিকে একত্রিত করে জনগণের স্বার্থে একতাবদ্ধভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব এবং বিশৃঙ্খলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

 

বর্ধিত সভায় বিএনপি, তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে আরও ঐক্যবদ্ধ, শক্তিশালী এবং জনপ্রিয় করার প্রত্যয় ঘোষণা করা হয়। সভায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কৌশলী, সক্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করা হয়, বিশেষ করে দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলনে নিহত, আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত নেতাকর্মীদের প্রতি তার মানবিক সহায়তার জন্য।

 

বর্ধিত সভায় দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্দোলনের পরবর্তী শহীদ ছাত্র-শ্রমিক-জনতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং আহত, পঙ্গু ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়। সভা থেকে প্রকৃত শহীদদের তালিকা, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, শহীদদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, আহতদের চিকিৎসা এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

 

বিএনপি, তার সহযোগীসহ শেখ হাসিনার নির্বিঘ্নে পালিয়ে যাওয়া এবং অপরাধীদের অবাধ বিচরণের বিষয়ে সরকারের ব্যাখ্যা চেয়েছে। এছাড়া, বিদেশে অবস্থানরত ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।