শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়েছে বুঝবেন যেভাবে

প্রকাশকালঃ ২৪ আগu ২০২৩ ০১:৩৭ অপরাহ্ণ ১৭০ বার পঠিত
শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়েছে বুঝবেন যেভাবে

নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে যে অসুখগুলো সবচেয়ে বেশি হয় তার মধ্যে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া অন্যতম। শরীরে কোলেস্টেরল থাকলেই যে বিপদ, এমন কিন্তু নয়। ভালো-খারাপ দুই ধরণের কোলেস্টেরলের মধ্যে ভালো কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়। তবে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে তা অবশ্যই চিন্তার বিষয়।

শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে তা একটি দরজার মতো কাজ করে। যে দরজা দিয়ে সহজেই ঢুকে পড়ে আরও অনেক রোগ। তাই প্রথম দিকেই শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে শরীরে নানা রোগব্যাধি বাসা বাঁধতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ, ওবেসিটি তো আছেই, কোলেস্টেরলের কারণে হৃদযন্ত্রেরও ক্ষতি হতে পারে। 


লক্ষণ
*অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে রাশ টেনে সুশৃঙ্খল জীবনযাপনের অভ্যাস গড়ে তোলার পাশাপাশি একটি সঠিক ডায়েট লিস্ট অনুসরণ করে সহজেই শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তবে তার আগে জানতে হবে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার লক্ষণগুলো সম্পর্কে। 

*কোলেস্টেরল বেশি মাত্রায় থাকলে চোখের নিচে হলুদ ভাব দেখা যায়। চোখের কর্নিয়ার পাশে ধুসর দাগ দেখা দিলে তা কোলেস্টেরলের লক্ষণ। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলেও অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন হতে পারে। যার থেকেই স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি থাকে। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, ধমনি সংক্রান্ত নানা ধরনের রোগের ঝুঁকির মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। তাই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা ভীষণ জরুরি। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই জানা যায় কোলেস্টেরল বেড়েছে না ঠিক আছে। এছাড়াও যাদের উচ্চ কোলেস্টেরল রয়েছে তাদের মধ্যে বেশ কিছু উপসর্গ রয়েছে যা দেখলেও বোঝা যায়। জেনে নিন কীভাবে।

*জন্ডিস হলেই চোখের নিচে হলুদ ভাব হয় তা কিন্তু নয়। কোলেস্টেরল বেশি মাত্রায় থাকলেও চোখে হলুদ ভাব দেখা যায়। এতে দেখতে কোনো সমস্যা হয় না কিন্তু একটানা বেশিদিন এরকম থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চোখের কর্নিয়ার পাশে ধুসর দাগ দেখা দিলে তা কোলেস্টেরলের লক্ষণ।

*রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে অনেক সময় রক্তনালী আটকে যায়। তখন মস্তিষ্কের রক্ত চলাচলে বাধা পড়ে।*এতে ঘাড় ও মাথার পেছনে ভীষণ ব্যথা হয়। শুধু মাথাতেই নয়, ঘাড়েও অস্বস্তিকর ব্যথা হয়।

*হৃদপন্দন বেড়ে যাওয়া শুধুমাত্র ব্যায়াম শারীরিক পরিশ্রম অথবা টেনশনের কারণেই  হয় না। কখনও কখনও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলেও অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন হতে পারে। যার থেকেই স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

*অল্প হাঁটলেই পা যন্ত্রণা করছে, মাঝেমধ্যেই পা অবশ হয়ে যাচ্ছে এই উপসর্গ কিন্তু কোলেস্টেরল বৃদ্ধির ইঙ্গিত হতে পারে। দীর্ঘ দিন ধরে মেদ জমার ফলে হৃদযন্ত্রের ধমনীর পথ সরু হয়ে যায়। ফলে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাধাপ্রাপ্ত হয়। বিশেষ করে দেহের নীচের অংশে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে ঝিঁঝি ধরার মতো লক্ষণ দেখা যায়।

*চোখের চারপাশে ছোট ছোট মাংসপিণ্ড জমছে কি না খেয়াল করুন। সাদা বা হলুদ রঙের ছোট ছোট দানা চোখের চারপাশে ভরে উঠলেই বুঝবেন, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়েছে।

*কোলেস্টেরল বাড়লে তার প্রভাব পড়ে নখেও। নখের উজ্জ্বলতাও হারিয়ে যায়, নখ হলুদ হয়ে যায়। অনেকের ক্ষেত্রেই নখের নীচের দিকে কালো ও বাদামি রঙের রেখাও চোখে পড়ে।

*জিভ দেখেও বোঝা যায় শরীরে কোলেস্টেরল বাসা বাধছে কি না। এক্ষেত্রে জিভের ওপর বিবর্ণ ছোট ছোট দানা বের হয়। ছোট ছোট দানার মতো আস্তরণ যখন সারা জিভে ছড়িয়ে পড়ে ও রং পরিবর্তন করে তখন সেই লক্ষণ উপেক্ষা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

*শরীরে মেদ জমাও কিন্তু উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে তলপেটে মেদ জমতে শুরু করলেও সচেতন হতে হবে।