গাজায় দুর্ভিক্ষের মধ্যেই ইসরায়েলের হামলা তীব্রতর

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:২৯ অপরাহ্ণ   |   ৩৩ বার পঠিত
গাজায় দুর্ভিক্ষের মধ্যেই ইসরায়েলের হামলা তীব্রতর

অনলাইন ডেস্কঃ-

 

গাজায় ত্রাণ প্রবেশের ওপর ইসরায়েলের আরোপিত অবরোধের ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে। এ সময় তীব্র খাদ্য সংকটে পড়ে গাজাবাসী চরম দুর্ভিক্ষে নিমজ্জিত। জাতিসংঘ সমর্থিত সংস্থা গত ২২ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করলেও মানবিক সংকট মোকাবিলায় কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সোমবার ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে আরও নয়জন মারা গেছেন। এরই মধ্যে গাজা সিটিতে আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা বেড়েছে। প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন হাজারো মানুষ।
 

মানবিক চিকিৎসা সংস্থা মেডিসিনস স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ) সতর্ক করে জানিয়েছে, দুর্ভিক্ষ ঘোষণার পরেও গাজার মানবিক ও চিকিৎসা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। অনাহার, খাদ্য সংকট ও চিকিৎসাহীনতা এখানকার বাস্তবতা। আলজাজিরার তথ্যমতে, জাতিসংঘের খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা (আইপিসি) পরিস্থিতিকে পঞ্চম ধাপের বিপর্যয় হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে। তাদের হিসেবে, গাজায় পাঁচ লাখের বেশি মানুষ চরম ক্ষুধায় ভুগছে। মৃত্যু, দারিদ্র্য ও অপুষ্টি এখন মারাত্মক আকারে দেখা দিয়েছে।
 

গত মার্চ থেকে দুর্ভিক্ষ আরও তীব্র হয়, যখন ইসরায়েল গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেয়। এতে খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি ও প্রয়োজনীয় সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এমএসএফসহ বিভিন্ন মানবিক সংস্থা সতর্ক করছে—অবিলম্বে ত্রাণ না পৌঁছালে গাজার জনসংখ্যা নজিরবিহীন দুর্ভিক্ষ ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার পতনের মুখে পড়বে।
 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৯৮ জন নিহত ও অন্তত ৪০৪ জন আহত হয়েছেন। শুধু সোমবারই মারা গেছেন ২৯ জন। গত ২২ মাসে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ৫৫৭ এবং আহত হয়েছেন এক লাখ ৬০ হাজার ৬৬০ জন। দুর্ভিক্ষে মৃত্যুর সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৩৩৯, যাদের মধ্যে ১২৪ শিশু।
 

মিডলইস্ট আই জানিয়েছে, রোববার রাতভর গাজার মধ্যাঞ্চলীয় দেইর আল-বালাহ শহরে একটি হাসপাতালের প্রাঙ্গণ ও আশ্রয়কেন্দ্রে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে বহু আহত ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ হাসপাতালে এটি ১৪তম হামলা। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, হাসপাতাল ও সাধারণ মানুষের ওপর এসব ধারাবাহিক অপরাধের পূর্ণ দায় ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের বহন করতে হবে।