বিরোধী দলনেতা হিসেবে কী সুবিধা পাবেন রাহুল, থাকবে যেসব ক্ষমতা নিজের জীবনের প্রথম সাংবিধানিক পদ গ্রহণ করেছেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও দলটির অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নেতা রাহুল গান্ধী। তাকে বিরোধী দলনেতা নির্বাচন করেছে কংগ্রেস তথা বিরোধী ‘ইনডিয়া জোট’।
ফলে ১৯৭৭ সালের সংসদীয় আইন অনুসারে, বেতন ও ভাতার পাশাপাশি বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা ও ক্ষমতাও পাবেন তিনি। নিয়ম অনুসারে, বিরোধী দলনেতা, ক্যাবিনেট মন্ত্রীর সমান মর্যাদা পান।এই সাংবিধানিক পদ কিন্তু রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক জীবনের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর আগে তার সম্পর্কে বিজেপি নেতারা নানা সময়ে কটাক্ষ করেছেন।
রাহুল গান্ধী পাঁচবারের লোকসভা সংসদ সদস্য। তিনি প্রথম সংসদ সদস্য হয়েছিলেন ২০০৪ সালে। সেসময় উত্তর প্রদেশের আমেঠি থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এখনও পর্যন্ত তিনি শুধুমাত্র একবারই নির্বাচনে হেরেছেন। সেটিও সেই আমেঠি থেকেই। ২০১৯ সালে তাকে পরাজিত করেছিলেন বিজেপির স্মৃতি ইরানি।পরে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তার সংসদ সদস্য পদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি কংগ্রেসের সভাপতি পদেও ছিলেন। বর্তমানে, তিনি যুব কংগ্রেসের চেয়ারপারসন। এইবারের নির্বাচনে তিনি ওয়ানাড় এবং রায়বরেলি থেকে ভোটে জিতেছেন।
তবে সাংবিধানিক কোনও পদ রাহুল গান্ধী এর আগে কখনোই গ্রহণ করেননি। ২০০৪ সালে এবং ২০০৯ সালে, কংগ্রেসের নেতৃত্বে সরকার গঠন করেছিল ইউপিএ জোট। সেই সময় চাইলেই কোনও ক্যাবিনেট মন্ত্রীর পদ পেতে পারতেন তিনি। কিন্তু, সেই দায়িত্ব তিনি নেননি।আর তাই, রাহুল প্রশাসক হিসেবে কেমন, তা জানার বা দেখার সুযোগই হয়নি ভারতের মানুষের। তাই, প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসেবে অনেকেই এখনও তার ওপর ভরসা রাখতে পারেন না। এবার মন্ত্রী না হলেও, বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব গ্রহণ তার অন্য দিকটি তুলে ধরতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিরোধী দলনেতা হিসাবে রাহুল গান্ধীর হাতে কী কী ক্ষমতা থাকবে?
১০ বছর পর ফের ভারতীয় লোকসভায় দেখা গেল প্রথম বিরোধী দলনেতাকে। এবার কিন্তু তার সমর্থন ছাড়া মোদি সরকারের পক্ষে একতরফা কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হবে। আগেই বলা হয়েছে, বিরোধী দলনেতা একজন ক্যাবিনেট মন্ত্রীর সমান মর্যাদা, বেতন এবং ভাতা পান। সেই হিসেবে রাহুল গান্ধীর বেতন হবে ৩ লাখ ৩০ হাজার রুপি।ক্যাবিনেট মন্ত্রী পর্যায়ের নিরাপত্তাও পাবেন তিনি। অর্থাৎ জেড প্লাস (Z+) ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পাবেন রাহুল। ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের মতো সরকারি বাংলোও পাবেন সাবেক এই কংগ্রেস সভাপতি।
সেই সঙ্গে রাহুল গান্ধী থাকবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং দুই নির্বাচন কমিশনার বাছাইয়ের তিন সদস্যের প্যানেলেও। তবে এখানে তিনি থাকবেন সংখ্যালঘু হিসেবে। কারণ, তিনি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়া, এই প্যানেলে থাকবেন আরও একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সিবিআই, ইডি বা সিভিসির মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর প্রধানদের বাছাই করার কমিটিরও সদস্য হবেন রাহুল গান্ধী। এই কমিটিগুলো বাছাইয়ের ক্ষেত্রে রাহুলের হাতে আরও বেশি ক্ষমতা থাকবে। তিন সদস্যের এই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।