ট্রেডমার্ক কি? কেন প্রয়োজন?

প্রকাশকালঃ ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:৫৯ অপরাহ্ণ ৩১৭ বার পঠিত
ট্রেডমার্ক কি? কেন প্রয়োজন?

ট্রেডমার্ক একটি চিহ্ন বা প্রতীক। এটি এক প্রতিষ্ঠান থেকে আরেক প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত বা সরবরাহ করা পন্য বা সেবা আলাদা করতে সক্ষম। পন্য বা সেবা আলাদা করার কাজে ব্যবহৃত স্বতন্ত্র যে কোনো শব্দ, বর্ণ, সংখ্যা, অংকন, ছবি, আকৃতি, রঙ, লোগো টাইপ, মোড়ক বা এগুলোর সংমিশ্রণ ট্রেডমার্ক হিসেবে গণ্য হতে পারে। কোনো কোনো দেশে বিজ্ঞাপনের স্লোগান ও ট্রেডমার্ক হিসেবে বিবেচিত হয় এবং জাতীয় ট্রেদমার্ক অফিসে ট্রেডমার্ক হিসেবে সেগুলো নিবন্ধিত হতে পারে। অনেক দেশ ট্রেডমার্কের ক্ষেত্রে কম প্রথাগত ধরন, যেমন একরঙ ত্রিমাত্রিক চিহ্ন (পণ্যের আকার বা মোড়ক), (ঘ্রাণ), ইত্যাদি নিবন্ধনের অনুমতি দেয়। তবে, ট্রেডমার্ক হিসেবে কি কি নিবন্ধিত হতে পারে সে বিষয়ে অধিকাংশ দেশ একটি মানদন্ড নির্ধারণ করেছে, সাধারণত সেই চিহ্ন বা প্রতীকগুলোরই অনুমতি প্রদান করা হয় যেগুলো চোখে দেখা যায় বা নকশার মাধ্যমে উপস্থাপন করা যায়। 

 


ট্রেডমার্ক কেন করতে হয় ?

 

ট্রেড মার্ক হলো এমন একটি স্বাতন্ত্র্যসূচক নাম বা চিহ্ন বা প্রতিক যা একটি কোম্পানীর পণ্যকে অন্য যে কোন কোম্পানীর পণ্য থেকে পৃথক করে একটি স্বতন্ত্র পণ্য বা সেবা হিসাবে পরিচিতি লাভ করতে সহযোগীতা করে। এই চিহ্ন শুধুমাত্র কোম্পানীর পণ্যকে একটি স্বগন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যই প্রদান করে না, এটি ত্রেুতা বা ভোক্তার আস্থা অর্জনেও ভূমিকা রাখে। ট্রেড মার্ক চিহ্নিত একটি পণ্য দেখে একজন ক্রেতা বা ভোক্তা সহজেই অনুমান করতে পারেন যে পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানীটির নির্দিষ্ট একটি লক্ষ্য বা প্রত্যাশা আছে এবং এটির একটি গুনগত মান আছে। আমাদের দেশে প্রচলিত সুনামধন্য ব্যান্ড এর নামে প্রায়ই নকল পন্য বাজারজাত করতে দেখা যায়। ট্রেড মার্ক সেক্ষেত্রে আপনার পণ্যের ব্র্যান্ড নাম বা লোগোর নিরাপত্তা বিধান এর কাজটি করে থাকে। ধরুন কেও যদি আপনার কোম্পানীর পণ্যের ব্যান্ড বা লোগো ব্যবহার করে পণ্য বাজারজাত করে তাহলে আপনি আইনের আশ্রয় নিতে পারবেন এবং আইনের সহযোগীতায় সেই নকলজাত পণ্য বাজারজাত বন্ধসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বা ক্ষতিপূরন আদায় করতে পারবেন। একবার ভাবুন তো, আপনি বা আপনাদের কোম্পানী বছরের পর বছর ধরে পরিশ্রম করে টাকা খরচ করে আপনাদের কোম্পানীর পণ্যের জন্য যে ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করলেন,  ক্রেতা এবং ভোক্তার কাছে জনপ্রিয় করে তুললেন, আস্থা অর্জন করলেন মূহুর্তের মধ্যে সেই জনপ্রিয়, আস্থাভাজন ব্যান্ড এর নামে আরেকজন একই ধরনের পণ্য বাজারজাত করা শুরু করলো। দিন কমতে হারাতে থাকলো আপনাদের বাজার, আস্তা, বিক্রি অন্যদিকে আপনি আইনেরও আশ্রয় নিতে পারছেন না কারন আপনি যেমন পণ্যের ব্যান্ড নামটি দাবী করছের ঠিক তেমনি পরবর্তীতে যিনি নকল পণ্য বাজারজাত করছে উনিও দাবী করছে ব্যান্ড নামটি! অথচ আপনি যদি আপনার ব্যান্ড নাম বা লোগোটি ট্রেড মার্ক করে রাখতেন তাহলে হয়তো এ রকম পরিস্থিতিতে আপনি আইনের আশ্রয় নিয়ে আপনি আপনার পন্যের ব্র্যান্ড নাম বা লোগোর উপর আপনার অধিকার অক্ষুন্ন রাখতে পারতেন। তাই কোন পন্যের ব্যান্ড তৈরীর আগে অবশ্যই তার উপর, আপনার কোম্পানীর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ট্রেড মার্ক করে নেয়া প্রয়োজন ।

 

ট্রেড মার্ক [Trade Mark]  নিজের ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি কে ধরে রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট ট্রেডমার্ক করা থাকলে সেই নামে অন্য কেউ আর এই ব্যবসাটি পরিচালনা করতে পারবে না। এবং আপনার কোম্পানির নাম অথবা লোগো ব্যবহার করে কেউ প্রতারণা করলে আপনি সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে লিগ্যাল অ্যাকশন নিতে পারবেন। তবে আপনাকে আবেদন করতে হবে কয়েকটি ফ্রম রয়েছে তার মধ্যে যেটি আপনার জন্য উপযুক্ত তা পূরণ করে ট্রেডমার্ক অফিসে জমা দিতে হবে প্রাথমিকভাবে তারা একটি ডকুমেন্ট দিবে তখন আপনার লোগোর উপর এ TM লিখতে পারবেন। এর পরে পর্যায়ক্রমে লোকাল এবং ইন্টার্নেশনাল মিলিয়ে দেখা হবে যে এই ব্র্যান্ডের নামে অন্য কোন কোম্পানি আছে কিনা তার জন্যে জার্নালে প্রকাশ করা হবে তারপর কোন আপত্তি না থাকলে 6 মাস থেকে 2 বছরের মধ্যে আপনি রেজিস্টার্ড হতে পারবেন এবং লোগোর উপরে ® লিখতে পারবেন।

 

 

ট্রেড মার্ক সংক্রান্ত রেগুলেটরি বডি

 

ট্রেডমার্ক আইন, ২০০৯ এবং ট্রেডমার্ক বিধি, ১৯৬৩ অনুসারে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন- পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশন দিয়ে থাকে