শেয়ার বিক্রি কমিয়ে পতন থামানো হলো শেয়ারবাজারে। এতে গত বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ৩৪ পয়েন্ট বেড়েছে। তবে লেনদেন নেমেছে ৩০০ কোটি টাকার নিচে।
বাজারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পতন ঠেকাতে বড় বড় ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সে জন্য এসব প্রতিষ্ঠান শেয়ার বিক্রি কমিয়ে দেয়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অবশ্য কারসাজি হয় এমন কিছু শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধি ঘটায় কারসাজিকারীরা। তাতে কোনো কোনো শেয়ারের সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। এভাবেই গতকাল বাজারে কৃত্রিমভাবে সূচক বাড়ানো হয়েছে।
ঢাকার বাজারে গতকাল মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল ফু–ওয়াং ফুড। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২ টাকা ৬০ পয়সা বা প্রায় ১০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ টাকা ৩০ পয়সায়। বেশ কিছুদিন ধরে কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে বাজারের একটি গোষ্ঠী কারসাজি করছে বলে শোনা যায়। এ কারণে মধ্যম মানের কোম্পানিটির শেয়ারের দাম এক মাসের কম সময়ে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
কয়েক দিনের টানা পতনের পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে গতকাল বাজারের বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠকে বসে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বৈঠকের সেই খবরে গতকাল সকালে লেনদেন শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে সূচকেরও উত্থান হয়। এর কারণ জানতে চারটি শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা জানান, এদিন তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বিক্রির প্রবণতা ছিল তুলনামূলক খুবই কম।
গতকাল সকাল ১০টায় শেয়ারবাজারে মিউচুয়াল ফান্ড ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত সম্পদ ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে বিএসইসির প্রথম বৈঠক হয়। আর দ্বিতীয় বৈঠকটি হয় বেলা ১১টায়। ওই বৈঠকে অংশ নেন ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেনসহ একাধিক ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা। প্রথম বৈঠকটিতে বিএসইসির নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির কমিশনার মিজানুর রহমান। দ্বিতীয় বৈঠকে নেতৃত্ব দেন নিয়ন্ত্রক সংস্থার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক শেষে বিএসইসির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উভয় বৈঠকে বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বিনিয়োগ বাড়াতে অংশীজনদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। ব্যাংক, মার্চেন্ট ব্যাংক ও সম্পদ ব্যবস্থাপকেরা বাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৯৯ কোটি টাকা। কৃত্রিমভাবে বাজারে শেয়ারের দাম বৃদ্ধির কারণে লেনদেন এত কম হয় বলে জানান বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এর আগে সর্বশেষ ২৮ মার্চ ডিএসইতে ৩০০ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়েছিল। সেদিন লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২৭২ কোটি টাকা।