জামায়াতের সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়লেন আমির ডা. শফিকুর রহমান

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৯ জুলাই ২০২৫ ০৬:৪৯ অপরাহ্ণ   |   ২৬ বার পঠিত
জামায়াতের সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়লেন আমির ডা. শফিকুর রহমান

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেল ৫টা ২৬ মিনিটে তিনি মঞ্চে বক্তব্য দেওয়ার সময় হঠাৎ পড়ে যান। প্রায় ৪৫ সেকেন্ড পর তিনি উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, “কিছু হয়নি।” তবে এর এক মিনিট পর তিনি আবারও পড়ে যান। কিছুক্ষণ পর ফের উঠে দাঁড়ান এবং মঞ্চের কার্পেটে বসেই ভাষণ দেওয়া শুরু করেন।
 

ডাক্তাররা তখন তাকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিলে তিনি বলেন, “এত কথা বলেন কেন?” অসুস্থ অবস্থাতেও বক্তব্য চালিয়ে যান তিনি।
 

এর আগে দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে সমাবেশস্থলে পৌঁছান জামায়াত আমির। তিনি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করলে রাস্তার দু’পাশে অবস্থান নেওয়া দলীয় নেতাকর্মীরা স্লোগান দিয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানান। হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান ডা. শফিক।
 

দুপুর ২টার দিকে শুরু হয় জাতীয় সমাবেশের মূলপর্ব। কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া সমাবেশ পরিচালনা করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল গোলাম পারওয়ার। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনায় ও সাইফুল্লাহ মানসুরের উপস্থাপনায় সমাবেশের প্রথম পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
 

সাত দফা দাবিতে আয়োজিত এই সমাবেশে অংশ নিতে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসতে শুরু করেন। আজ সকাল থেকে মিছিল নিয়ে তারা সমাবেশস্থলে যোগ দেন। সকাল ১০টার মধ্যেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। জায়গা না পেয়ে অনেকে আশপাশের এলাকা—শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট, মৎসভবন, কাকরাইল, বাংলামোটর ও সায়েন্সল্যাব এলাকায় অবস্থান নেন।
 

সমাবেশ উপলক্ষে উদ্যানে কেন্দ্রীয় মঞ্চ ছাড়াও আশপাশের সড়কজুড়ে মাইক লাগানো হয় এবং নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছড়িয়ে পড়ে দৈনিক বাংলা, গুলিস্তান, বিজয়নগর ও শাহবাগ পর্যন্ত।
 

জামায়াত সূত্র জানায়, নির্বাচনী সংস্কার, জুলাই গণহত্যার বিচার, অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পুনর্বাসন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (পিআর) ব্যবস্থায় নির্বাচন, প্রবাসীদের ভোটাধিকারসহ সাত দফা দাবিতে এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ ছাড়াও সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা সীমিতকরণসহ বিভিন্ন মৌলিক সংস্কার না হলে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন দলীয় নেতারা।
 

জামায়াতের দাবি, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন ও উচ্চকক্ষ গঠনে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকে রাজি করানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমমনা দলগুলোকে এই সমাবেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যার মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নামও রয়েছে।
 

স্বাধীনতার পর এই প্রথমবারের মতো জামায়াতে ইসলামী এককভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করলো। ২০০৯ সালের পর এটিই দলটির প্রথম সমাবেশ এ ঐতিহাসিক স্থানে। বিগত ১১ মাসে দেশের প্রতিটি জেলায় দলটি কর্মী সমাবেশ করেছে এবং সেখান থেকেই তারা দলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে, যা একরকম নির্বাচনী সমাবেশে পরিণত হয়েছে।