আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা জুড়ে কৃষ্ণচূড়া ফুলের অসাধারণ এক অপরূপ সৌন্দর্যে সবার মন কাড়ছে। বৈশাখের রঙিন আকাশে গনগনে সূর্যের আলো ছড়াচ্ছে। কাঠফাটা প্রচণ্ড রোদ থেকে তপ্ত বাতাস। প্রকৃতি যখন আকাশে প্রখর রৌদ্রে পুড়ছে, কৃষ্ণচূড়া ফুল তখন জানান দিচ্ছে তার অপরূপ সৌন্দর্যের বার্তা। গ্রীষ্মের নিষ্প্রাণ রুক্ষতা ছাপিয়ে প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়া নিজেকে মেলে ধরছে এক আপন মহিমায়।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, গাছে গাছে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া। এ যেন লাল রঙে কৃষ্ণচূড়ার পসরা সাজিয়ে বসে আছে প্রকৃতি। চোখ ধাঁধানো টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুলে সেজেছে গ্রীষ্মের প্রকৃতি। গ্রীষ্মের ছোঁয়া লাগার পর থেকেই প্রকৃতির শোভা বর্ধনকারী কৃষ্ণচূড়া ফুল অপরূপ সাজে সাজিয়ে রঙিন করে তুলেছে। ফুলপ্রেমিসহ সাধারণ মানুষদের দৃষ্টি কাড়ছে কৃষ্ণচূড়া। দূর থেকে দেখলে মনে হয়-যেন লাল রঙের পাহাড় দাঁড়িয়ে আছে মাথা উঁচু করে। কৃষ্ণচূড়া তার রক্তিম আভা ছড়ানোর মাধ্যমে প্রকৃতিকে সাজিয়ে তুলেছে অপরূপ সৌন্দর্যে। কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য দেখে মন ভরে যাচ্ছে প্রকৃতি প্রেমীদের।
কৃষ্ণচূড়া রক্তিমতায় মাতিয়ে রাখা এই বৃক্ষের উচ্চতা তেমন একটা বেশি হয় না। সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত উপরে উঠলেও তার শাখা প্রশাখা বিশাল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত থাকে। পাপড়িগুলো প্রায় ৭ থেকে ৮ সেন্টিমিটার লম্বা হতে পারে। প্রতিটি পাতা ২৫ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২৫ থেকে ৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট। গ্রীষ্মজুড়ে প্রকৃতিকে মাতিয়ে রাখলেও অন্যান্য সময়গুলোতে এ বৃক্ষের উপস্থিতি খুব একটা চোখে পড়ে না।
ফুলবাড়ী উপজেলায় এক সময় ব্যাপক কৃষ্ণচূড়া ফুল গাছ ছিল। প্রতি বছর এই গ্রীষ্মে ফুলফুটে প্রকৃতিতে শোভা বর্ধন করতো। কালের আবর্তে সেই কৃষ্ণচূড়ার গাছ এখন অনেকটাই কমে গেছে।
তারপরও উপজেলা সদরের তিনকোণা মোড়ের সামনে, বালারহাট বাজার ও নাওডাঙ্গা বকুলতলা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষ্ণচূড়া শোভা পাচ্ছে।
সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুল আজিজ মজনু ও শাহীনুর রহমান শাহিন জানান, এখন সময় কৃষ্ণচূড়া ফুলসহ পুরো শহর জুড়ে বিভিন্ন ফুলের গাছ থাকায় এ উপজেলার নাম করণ হয়েছে ফুলবাড়ী। কালের আবর্তে কৃষ্ণচূড়াসহ বিভিন্ন ফুলের গাছ এখন অনেকটাই কমে গেছে। তারপরেও উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষ্ণচূড়া ফুল সুভাস ছড়াচ্ছে। এই ফুলের সৌন্দর্যে প্রকৃতিতে এখন ভিন্ন রং এসেছে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের অপরূপ শোভায় শোভিত হয়েছে। যে কাউকে আকৃষ্ট করছে এই ফুল গাছগুলো।
এক দিকে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা ও অন্য ফুলবাড়ীর ফুলের সৌন্দর্য ফিরে আনতে কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা: হামিদুল হক খন্দকার ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন সড়কে ১ লাখ কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগানোর প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে দুই হাজার কৃষ্ণচূড়া ফুলের গাছ রোপণ করেছে বলে জানান তারা।
নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল হানিফ সরকার জানান, কৃষ্ণচূড়া অতিপরিচিত বৃক্ষ। তবে আমাদের প্রতিষ্ঠানে কৃষ্ণচূড়ার গাছ না থাকলেও কলেজের সামনে নাওডাঙ্গা বকুলতলা বাজারে একটি কৃষ্ণচূড়া ফুল গাছ অপরূপ সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে সবার মাঝে। গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতির সৌন্দর্য ও মনোমুগ্ধকর পরিবেশ দেখে অনেকেই মুগ্ধ হচ্ছে। তবে কিছুদিনের মধ্যে কলেজ ক্যাম্পাসে বেশ কিছু কৃষ্ণচূড়া ফুল গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।