যেসব সতর্কতা জরুরি মানত পালনের ক্ষেত্রে

প্রকাশকালঃ ৩০ আগu ২০২৩ ০৫:২০ অপরাহ্ণ ২১৩ বার পঠিত
যেসব সতর্কতা জরুরি মানত পালনের ক্ষেত্রে

মানুষ বিভিন্ন সময় উদ্দেশ্য পূরণের জন্য মানত করে। এই প্রবণতা গ্রামীণ মা-বোনদের মধ্যে বেশি। নুন থেকে চুন খসলেই তারা মানত করে বসে। যে অমুক আশা পূরণ হলে মসজিদে আগরবাতি, মোম বা শিরনি দেব, ছাগল সদকা করব ইত্যাদি।

অথচ মানত দ্বারা কখনো ভাগ্য বদলায় না। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা মানত কোরো না। কেননা মানত ভাগ্যের পরিবর্তন করতে অক্ষম। এর দ্বারা কৃপণ লোকের কিছু আর্থিক খরচ হয় মাত্র। (তিরমিজি, হাদিস : ১৫৩৮)

সাঈদ ইবনে হারিস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি ইবনে উমর (রা.)-কে বলতে শুনেছেন, ‘তোমাদের কি মানত করতে নিষেধ করা হয়নি? নবী (সা.) তো বলেছেন, মানত কোনো কিছুকে বিন্দুমাত্র এগিয়ে নিতে পারে না এবং পেছাতেও পারে না। মানতের মাধ্যমে কৃপণের কাছ থেকে (কিছু সম্পদ) বের করে নেওয়া হয়।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৬৯২)


এ জন্য কোনো কোনো মনীষী মানত করাকে মাকরুহ বলেছেন। আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারাক বলেন, ‘মানত করা মাকরুহ’ কথার তাৎপর্য এই যে আনুগত্য ও নাফরমানি উভয় ক্ষেত্রেই মানত করা মাকরুহ।

কোনো লোক আনুগত্যমূলক কাজে মানত করার পর তা সম্পন্ন করলে সে সাওয়াবের অধিকারী হলেও এ ধরনের মানত মাকরুহ। তবে ভালো কাজের মানত করে ফেললে তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে। আয়েশা (রা.) সূত্রে নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি এরূপ মানত করে যে সে আল্লাহর আনুগত্য করবে, সে যেন আল্লাহর আনুগত্য করে। আর যে মানত করে, সে আল্লাহর নাফরমানি করবে, সে যেন তাঁর নাফরমানি না করে। (বুখারি, হাদিস : ৬৬৯৬)

এমনকি কেউ তার মানত আদায় না করে মারা গেলে তার ওয়ারিশরা যদি সচ্ছল হয়, তখন তাদের দায়িত্ব হয়ে যায় সেই মানত পূরণ করা।


ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, উবাইদুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ (রা.)-কে ইবনে আব্বাস (রা.) জানিয়েছেন যে সাদ ইবনু ‘উবাদা আনসারি (রা.) নবী (সা.)-এর কাছে জানতে চেয়েছিলেন তাঁর মায়ের কোনো এক মানতের ব্যাপারে, যা আদায় করার আগেই তিনি ইন্তেকাল করেন। তখন নবী (সা.) তাকে তার মায়ের পক্ষ থেকে মানত পূর্ণ করার আদেশ দিলেন। পরবর্তী সময়ে এটাই সুন্নত হয়ে যায়। (বুখারি, হাদিস : ৬৬৯৮)

যেহেতু মানত ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে না, আবার মানত করলে তা আদায় করাও জরুরি হয়ে যায়, তাই অহেতুক মানত করা উচিত নয়। উদ্দেশ্য পূরণে মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা যেতে পারে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তাকদিরের বিরুদ্ধে সতর্কতা কোনো কাজেই আসবে না। যা ঘটেছে ও যা ঘটতে পারে, তা থেকে শুধু দোয়াই পারে নিষ্কৃতি দিতে। কোনো কোনো দুর্দশার সঙ্গে মোকাবেলা করে বিচার দিন পর্যন্ত লড়াই করতে থাকে দোয়া।’ (তাবরানি আউসাত, হাদিস : ১৫১৯)

এ ছাড়া তাওবা-ইস্তিগফার করা যেতে পারে, সালাতুল হাজত ইত্যাদি পড়া যেতে পারে। হুজাইফা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) কোনো কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হলে নামাজ আদায় করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩১৯)

মহান আল্লাহ সবাইকে সঠিকভাবে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন