শরীফ ওসমান হাদির জানাজার আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “হাদির মন্ত্র ছিল—বল বীর, চিরউন্নত মম শির। তিনি আমাদের মাথা নত না করার শিক্ষা দিয়ে গেছেন। এই মন্ত্র আমাদের অন্তরে চিরকাল থাকবে।”
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজার আগে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, “লক্ষ লক্ষ মানুষ হাদির কথা শোনার জন্য এখানে এসেছে। আমরা ওসমান হাদিকে বিদায় দিতে আসিনি। তিনি আমাদের বুকের মধ্যে বেঁচে আছেন এবং বেঁচে থাকবেন। আমরা হাদির কথা বাস্তবায়ন করব—এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”
ড. ইউনূস বলেন, “মাথা নত না করে উঁচু রাখা, সাহসী ও নির্ভীক জীবন যাপনের অনুপ্রেরণা দিয়েছেন শরীফ ওসমান হাদি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন তার মূল্যবোধ ও আদর্শ মানুষের হৃদয়ে জ্বলজ্বল করবে।”
এদিকে, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের জানাজার পর সবাইকে শাহবাগে যেতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও হাদির ওপর হামলাকারীকে গ্রেফতার করা হয়নি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদাবক্স চৌধুরীকে তাদের পদক্ষেপ সম্পর্কে জনগণকে জানাতে হবে।”
এদিন সকালে শরীফ ওসমান হাদির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। এরপর গোসলের জন্য তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। ভোর থেকেই শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ জড়ো হন হাসপাতাল ও জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায়।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে দুর্বৃত্তের গুলিতে গুরুতর আহত হন ওসমান হাদি। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে সার্জারি করা হয়। পরে পরিবারের ইচ্ছায় তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৩০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এর আগে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে ভাষণে হাদির মৃত্যুতে শনিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন।