বিশ্ব ইজতেমায় আহত কুড়িগ্রামের সাদপন্থি সুমনের ৪৫ দিন পর ইন্তেকাল

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ০৫:০৪ অপরাহ্ণ   |   ১৩৫ বার পঠিত
বিশ্ব ইজতেমায় আহত কুড়িগ্রামের সাদপন্থি সুমনের ৪৫ দিন পর ইন্তেকাল

ঢাকা প্রেস
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-



 

কুড়িগ্রামে ফুলবাড়ী উপজেলা শহরের শহীদ লুৎফর রহমান সরণির (থানা রোড) সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান সুমন (৩৮) ঢাকা মেডিকেলে ৪৫ দিন চিকিৎসায় থাকার পর ২৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার ভোররাত ৩ টায় মারা গেছেন।
 

গতবছরের ১৭ ডিসেম্বর টঙ্গীর বিশ্ব এস্তেমা মাঠে জোড় এস্তেমায় শরীক হয়ে জোবায়ের ও সাদপন্থিদের সৃষ্ট সংঘর্ষে হামলার শিকার হয়ে ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে ৪৫ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান তিনি। 
 

নিহত মিজানুর রহমান সুমন তাবলিগ জামাতের নিজামুদ্দিন মার্কাজের অনুসারী ছিলেন বলে জানা গেছে। তিনি ফুলবাড়ী উপজেলা শহরের শহীদ লুৎফর রহমান সরণির (থানা রোড) সংলগ্ন এলাকার ছবির উদ্দিন প্রামাণিকের প্রথম পুত্র সন্তান। 
 

তার একজন ছোটভাই থাকলেও বিগত কয়েক বছর আগে সে সড়কে গাড়ি চাপায় মারা যায়। বর্তমান নিহত মিজানুর রহমান সুমনের পরিবারে তার একমাত্র বিবাহিত বোন, বাবা, মা ও সুমনের ২ মেয়ে ১ ছেলে তার স্ত্রী রয়েছে।
 

এদিকে, মিজানুর রহমান সুমনের মৃত্যুর খবর গ্রামের বাড়িতে আসলে কান্নার রোল পড়ে যায়। এলাকায় নিহত মিজানুর একজন সরল ও মিশুক স্বভাবের মানুষ হওয়ায় তার মৃত্যুর খবরে এলাকাবাসী ছুটে আসে তার বাড়িতে। তাবলিগ জামাতের নিজামুদ্দিন মার্কাজের অনুসারীরা ছুটে আসেন।
 

তাবলিগ জামাতের নিজামুদ্দিন মার্কাজের অনুসারীরা (সাদপন্থি) তাবলিগের কুড়িগ্রাম সাথী ও ফুলবাড়ীর সাথীরা নিহত মিজানুরের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান। নিহত মিজানুরের রুহের মাগফেরাতে তাবলিগ জামাতের নিজামুদ্দিন মার্কাজের অনুসারীরা (সাদপন্থি) সাথীদের উদ্যোগে ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কলেমা খতম ও কোরআনখানির আয়োজন করা হয়।
 

স্থানীয় বাসিন্দা আজিজুল হকা জানান, নিহত মিজানুর রহমান এলাকায একজন সরল ও স্বাভাবের মানুষ। সে মাছির মতো নীরব। তাকে হামলা করে মৃত্যু পদযাত্রী করাটা নিন্দনীয় ঘটনা। আমরা এলাকাবাসী ব্যথিত হয়েছি। যারা তার মতো সরল নীরিহ মানুষকে হামলা মৃত্যু পদযাত্রী করলো তাদের তদন্ত স্বাপেক্ষে বিচার করা উচিত।
 

জানা গেছে, মিজানুর রহমান সুমন ছোট থেকেই দিল্লীর নেজামুদ্দিন মার্কাজের অনুসারী হয়ে তাবলিগ জামাতের কাজ শুরু করেন। ৩ চিল্লা, ১ চিল্লা, মাসে ৩ দিন করে দ্বীনের দাওয়াতের সফরে যেতেন। সর্বশেষ মুরব্বীদের তাকাজা পূরণের জন্য তার কাছে টাকার জোগান না থাকার পরও ১৭ ডিসেম্বর ছুটে যায় টঙ্গীর ময়দানে। 
 

এতে জুবায়ের-সাদপন্থিদের সৃষ্ট সংঘর্ষে জুবায়ের পন্থিদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধনি থাকার পর মঙ্গলবার ভোর রাত ৩ টাকার দিকে মিজানুর রহমান সুমন মারা যায়।
 

এ ব্যাপারে নিহত মিজানুর রহমান সুমনের বাবা ছবির উদ্দিন প্রামাণিক জানান, আমার ছেলের লাশ পুলিশি প্রক্রিয়া শেষ করে ঢাকায় একটি জানাযা সম্পন্ন করে বাড়িতে আনা হবে। এরপর ফুলবাড়ী জছিমিঞা মাঠে ও বিদ্যাবাগীশ চাঁদেরহাট এলাকায় জানাযা সম্পন্ন করে পারিবারিক কবরস্থান বিদ্যাবাগীশ গ্রামে দাফন করা হবে। তবে তিনি জানাযা কখন হবে এর সময় জানাতে পারেননি।