ঢাকা প্রেস,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ধানের তুষ-কুঁড়ো থেকে তেল (রাইস ব্র্যান ওয়েল) উৎপাদনকারী একটি কারখানার কারণে কৃষকরা বিপদে পড়েছেন। ওই কারখানার বয়লার থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবের কারণে কৃষি জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি, কৃষিকাজে বিশাল প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা বিষয়টি মৌখিকভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছেন না।
এ অভিযোগ উঠেছে মজুমদার এগ্রো টেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড কোম্পানির বিরুদ্ধে। কোম্পানিটি উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামে যশোর-খুলনা হাইওয়ে সড়ক ঘেঁষে ৬ বিঘা জমির ওপর অবস্থিত। কারখানার চারপাশে শত শত বিঘা কৃষি জমি রয়েছে, যেখানে স্থানীয় কৃষকরা ধান, রবি শস্য ও শাকসবজি চাষ করেন।
জানা গেছে, মজুমদার এগ্রো টেক কোম্পানি প্রায় ২০ দিন আগে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে উৎপাদন শুরু থেকেই কারখানার বয়লারের কালো ধোঁয়া ও ছাই আশপাশের জমিতে পড়ছে, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আবাদি ফসল। এর ফলে কৃষকদের জীবিকা সংকটে পড়েছে এবং স্থানীয়দের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটছে।
এদিকে, বিষয়টি স্থানীয় কৃষকরা কর্তৃপক্ষকে জানালেও সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি, যা স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
মজুমদার এগ্রো টেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অসীম কুমার ঘোষ জানান, তাদের কোম্পানি চালের তুষ থেকে রাইস ব্র্যান ওয়েল উৎপাদন করে। সম্প্রতি উৎপাদন শুরু হয়েছে, তবে তারা আশ্বাস দেন যে, আশপাশের জমির কোনো ক্ষতি তারা করবেন না। ছাই ও পানি নিষ্কাশনের সমস্যা সম্পর্কে স্থানীয়রা তাদের জানিয়েছে এবং তারা শিগগিরই ব্যবস্থা নেবেন।
কালীগঞ্জ কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি বলেন, "বারবাজারের পিরোজপুর এলাকায় একটি বড় কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এবং তার অশোধিত বর্জ্য কৃষি জমিতে চলে যাওয়ার কারণে চাষাবাদে ক্ষতি হচ্ছে। আমি আরও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।"
ঝিনাইদহ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মুনতাছির রহমান জানান, "কারখানার লাইসেন্স ইস্যু করার সময় দূষণ নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের শর্ত দেওয়া হয়েছিল। তবে শর্ত না মানলে লাইসেন্স স্থগিত করা হবে। বিষয়টি আমার নজরে এসেছে এবং শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"