এক এক করে ১০০০তম ম্যাচ খেলে ফেলল জার্মানির জাতীয় ফুটবল দল। তবে গত পরশু রাতে ১০০০তম ম্যাচটা জার্মানদের সঙ্গে খুব সুখের হয়নি। নিজেদের ঘরের মাঠেও বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি জার্মানিকে কিনা মাঠ ছাড়তে হয়েছে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেনের মতো দলের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করে।
ম্যাচের এই সংক্ষিপ্ত পরিসংখ্যান জার্মানদের হতাশার কথাই বলছে। তা ইউক্রেনের মতো দলের বিপক্ষে ড্র করাটা জার্মানদের জন্য হতাশারই। তবে জার্মানরা কিন্তু ততটা হতাশ নন। বরং হারের মুখ থেকে ড্র করার তৃপ্তি আছে তাদের। তাছাড়াও জার্মানদের আছে অন্যরকম এক স্বস্তি। নিজেদের ১০০০তম ম্যাচটাকে যে ইউক্রেনের ওপর হামলা করা রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবেই নিয়েছিল জার্মানরা। তাই তো আগেই তারা ১০০০তম ম্যাচটি ইউক্রেনের বিপক্ষে খেলার ঘোষণা দেয়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, নিজেদের ঘরের মাঠের ম্যাচটিতে জার্মান সমর্থকরা ইউক্রেনের হয়েও গলা ফাটিয়েছে, সমর্থন দিয়েছে! এমনকি ইউক্রেনিয়ানরা গোল করার পরও করতালি দিয়েছে জার্মানরা! বোঝাই যাচ্ছে, ইউক্রেনকে সমর্থন করে হামলাকারী রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে জার্মানরা। ম্যাচটা জার্মানরা খেলতে নেমেছিল বুকে ‘১০০০’ লেখা বিশেষ জার্সি পরে।
জিতলে মাইলফলকটা জার্মানদের জন্য স্মরণীয় হয়েই থাকত। তবে ১-৩ গোলে পিছিয়ে থেকে ড্র করাও কম কৃতিত্বের নয়। ম্যাচের ৮৩ মিনিট পর্যন্তও ৩-১ গোলে এগিয়ে ছিল সফরকারী ইউক্রেন। বাকি সময়ে দুই গোল করে ৩-৩ সমতা নিয়ে হাসতে হাসতেই মাঠ ছেড়েছে জার্মানরা। ম্যাচের ৬ মিনিটেই জার্মানদের এগিয়ে দেন তাদের ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের আবিষ্কার সেই নিকলাস ফুলক্রুগ। ১৮ মিনিটে ইউক্রেনকে সমতায় ফেরান ভিক্টর সিহানকোভ। ২৩ মিনিটে আবারও এক জার্মানের গোল! তবে প্রতিপক্ষের জালে নয়, জার্মান ডিফেন্ডার অ্যান্তোনিও রুডিগার বল নিজেদের জালেই জড়িয়ে দেন। আত্মঘাতী গোলে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় ইউক্রেন। ৫৬ মিনিটে নিজেদের দ্বিতীয় গোল করে ইউক্রেনের লিড ৩-১ করেন ঐ সিহানকোভ। জার্মানির ৮৩ মিনিটে ব্যবধান ৩-২ করেন কাই হাভার্টজ। যোগ করা সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে জার্মানিকে ড্রয়ের স্বস্তি দেন জশুয়া কিমিখ।
১৯০৭ সালে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম অফিসিয়াল ম্যাচ খেলে জার্মানরা। সেই থেকে ১১৬ বছরের মাথায় ছুঁয়ে ফেলল ১০০০ ম্যাচের মাইলফলক। হাজার ম্যাচের মধ্যে জার্মানরা জিতেছে ৫৭৮টি ম্যাচে, হেরেছে ২১৪টিতে, বাকি ২০৮টিতে ড্র। জার্মানির আগে ১০০০ ম্যাচের মাইলফলক ছুঁয়েছে আরো তিনটি দল। এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ১০৪৩টি ম্যাচ খেলেছে ফুটবলের জন্মভূমি ইংল্যান্ড। ইংলিশদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা খেলেছে ১০৩৮টি ম্যাচ। পাঁঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল খেলেছে ১০২৩টি ম্যাচ। ইংল্যান্ড ২০১৯ সালে নিজেদের ১০০০তম ম্যাচে ৭-০ গোলে জিতেছিল মন্টেনিগ্রোর বিপক্ষে। একই বছর নিজেদের ১০০০তম ম্যাচে আর্জেন্টিনা ২-২ গোলে ড্র করেছিল ইসরাইলের সঙ্গে। আর ব্রাজিল ২০২১ সালে নিজেদের ১০০০তম ম্যাচে ১-০ গোলে হারিয়েছিল চিলিকে।