ইমারত নির্মাণে ব্যত্যয়রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পূর্ব রাজাবাজার এলাকাবাসীর  সাথে রাজউক চেয়ারম্যান এর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় 

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২০ এপ্রিল ২০২৫ ০১:০৬ অপরাহ্ণ   |   ৯৭ বার পঠিত
ইমারত নির্মাণে ব্যত্যয়রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পূর্ব রাজাবাজার এলাকাবাসীর  সাথে রাজউক চেয়ারম্যান এর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় 

মোহাম্মদ তারেক, বিশেষ প্রতিনিধি:-

 

১৯ এপ্রিল, ২০২৫,শনিবার বিকাল ৪ ঘটিকায় পূর্ব রাজাবাজারের নাজনীন স্কুল ও কলেজে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রিয়াজুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রাজউক চেয়ারম্যান উপস্থিত এলাকাবাসীদের কাছে থেকে তাদের রাজউক সংশ্লিষ্ট সমস্যা সম্পর্কে জানেন এবং তা সমাধানের দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। 
 

আজকের মতবিনিময় সভায় পূর্ব রাজাবাজার এলাকার রাস্তা প্রশস্তকরণের লক্ষ্যে এলাকাবাসীর অভিমত গ্রহণ, রাস্তার জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণ থেকে বিরত করার নির্দেশনা এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অবহিতকরণ- এ বিষয়সমূহে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় রাজউক এর পক্ষ থেকে অবহিত করা হ্য় যে, ড্যাপ অনুযায়ী যতটুকু রাস্তা আছে সে অনুসারে রাস্তা প্রসস্ত করতে হব্যত্যয়কৃত ভবনের বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ডিপিডিসি, তিতাস গ্যাস ও ওয়াসা রাজউক এর সাথে সহযোগিতা করবে বলে অবহিত করে। 
 

সভায় রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, "নির্মানাধীন ভবনে কোন ব্যত্যয় ঘটানো চলবেনা। সকল নির্মাণ কার্যক্রম নকশা অনুযায়ী হতে হবে। যে কোন ব্যত্যয় পাওয়া গেলে ইউটিলিটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। এক্ষেত্রে রাজউক জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর জেনারেটর ব্যবহার করলে, জেনারেটর জব্দ করা হবে। প্রয়োজনে ভবনের নকশা বাতিল করতেও রাজউক প্রস্তুত। ৩৩৮২ টি নির্মাণাধীন ভবন চিহ্নিত করা হয়েছে যেগুলোতে ব্যত্যয় রয়েছে। সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জুলাই আন্দোলনের শহীদ মুগ্ধ,  আবু সাঈদ দের চেতনাকে বুকে ধারণ করে আমরা এখানে এসেছি। তাদের এই আত্মত্যাগ মনে রেখে আমরা নিয়ম মেনে চলবো।" 
 

তিনি আরও বলেন, "তিলোত্তমা ঢাকা না গড়ে শুরুতে বাসযোগ্য ঢাকা গড়ার প্রত্যয় আমরা নিচ্ছি। অন্যের ব্যত্যয়ের উদাহরণ না দেখিয়ে নিজে নিয়ম মেনে ভবন নির্মাণ করলে অন্যরাও নিয়ম মেনে চলতে অনুপ্রাণিত হবে।" 


এসময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আবু সাঈদ মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, 


"রাস্তা প্রশস্তকরণ এবং জনগণকে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা সম্পর্কে অবহিতকরণ আজকের সভার উদ্দেশ্য। গত কয়েক দশক ধরে ঢাকায় মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, ভবন বেড়েছে, কিন্তু স্যুয়ারেজ বাড়েনি। নাগরিক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পায়নি। এর প্রধান কারণ অপরিকল্পিত ভবন নির্মান। এর জন্য জনগণকে সচেতন হতে হবে। অন্যথায় বাসযোগ্য নগরী গড়ে তোলা সম্ভব হবেনা।"


সভায় উপস্থিত রাজউক এর সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) জনাব মোঃ হারুন-অর-রশীদ বলেন, "ভবন গুলোতে নির্মাণ কালে ব্যত্যয় হলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হবে। এছাড়াও এমম নিয়ম করা হচ্ছে যাতে রাজউক অনুমোদন দিলে ডিপিডিসি বা অন্যরা সংযোগ দিবে, অন্যথায় নয়। আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি ঝামেলাহীন ভবন রেখেযেতে চাই যেন তাদের হয়রানির শিকার না হতে হয়। এর পূর্বে পরিদর্শনকালে ব্যত্যয়কৃত কিছু ভবনে লাল কালির দাগ দেওয়া হয়েছে, ভবন মালিকদের বলা হয়েছে অপসারণ করে নিতে। তারা সেটা না করলে রাজউক থেকে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।" 

 

আজকের মতবিনিময় সভায় উপস্থিত এলাকাবাসীদের একজন বলেন, গত ৪০ বছরেও এমন কোন সভা বা মতবিনিময় সভা এলাকাবাসী দেখেনি। এর জন্য তারা রাজউক কে সাধুবাদ জানান। এছাড়াও তারা রাজউক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। 
 

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, রাজউক এর পরিচালক (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) জনাব মোঃ মনিরুল হক, সংশ্লিষ্ট জোনের পরিচালক সহ রাজউক এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, ডিপিডিসি, তিতাস, ঢাকা ওয়াসার প্রতিনিধিবৃন্দ, এলাকাবাসীদের প্রতিনিধিবৃন্দ সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকগণ।