আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায় পাত্রখাতা খালের উপর নির্মাণাধীন একটি সেতুতে চরম অনিয়ম ও নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির সংযোগ সড়কের গাইড ওয়ালের স্লাব হাতের সামান্য চাপেই ভেঙে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এতে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুটির মূল কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়কের গাইড ওয়ালের কাজ এখনো চলমান। কিন্তু গাইড ওয়ালের স্লাবে হাতের সামান্য চাপেই কংক্রিট ভেঙে ধূলায় পরিণত হচ্ছে। বিষয়টি থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, এখানে কতটা নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের পাত্রখাতা এলাকায় রংপুর বিভাগ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় ৬৮ মিটার দীর্ঘ এই সেতুর নির্মাণ কাজ ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর শুরু হয়। চুক্তি অনুযায়ী সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের ৮ জুনের মধ্যে। তবে সময়মতো কাজ শেষ করতে না পারায় এর সময়সীমা ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
প্রায় ৩ কোটি ৪০ লাখ ৩১ হাজার ২৯৬ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেতুর নির্মাণ কাজ করছে মেসার্স বসুন্ধরা ও মেসার্স খায়রুল এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিনে সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মূল সেতুর কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়কের কাজ এখনো চলমান। গাইড ওয়ালে ব্যবহৃত ভাঙা কংক্রিটের স্লাব সড়কের পাশে জড়ো করে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে রমনা মডেল ইউনিয়নের পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল আজিজ আকন্দ বলেন, নির্মাণকাজ চলাকালে আমরা দেখেছি, সিমেন্ট ও পাথরের গুণগত মান একেবারেই ভালো ছিল না। এখন তারই ফল ভোগ করছি। স্লাবে হাত দিলেই সেটা ভেঙে ধূলায় পরিণত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম (৫৫) বলেন, এই সেতু আমাদের যাতায়াতের একমাত্র পথ। নির্মাণে এতটাই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হয়েছে যে সেতুর স্থায়িত্ব নিয়ে আমরা শঙ্কিত। স্থানীয় এলজিইডি কর্মকর্তাদের একাধিকবার জানালেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী লেলিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী জুলফিকার আলী বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সেতু এলাকায় গিয়েছিলাম। সেখানে দেখা যায়, কিছু রিজেক্টেড ব্লক গাইড ওয়ালের স্লাবের ওপর রাখা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে সেগুলো অপসারণ করতে বলা হয়েছে। এমন নিম্নমানের ব্লক ব্যবহার করা যাবে না।