গণপূর্তে টেন্ডার বিতর্ক: প্রশ্নের শীর্ষে হারুন অর রশিদ

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০১:১৯ অপরাহ্ণ   |   ০ বার পঠিত
গণপূর্তে টেন্ডার বিতর্ক: প্রশ্নের শীর্ষে হারুন অর রশিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

 

নারায়ণগঞ্জের গণপূর্ত বিভাগে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ১০ কোটি টাকার একাধিক টেন্ডার, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ক্যাডার সংস্কৃতি এবং সিন্ডিকেটের অভিযোগের মাঝেই হঠাৎ আলোচনায় এসেছেন নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ। তার পক্ষে প্রকাশিত একটি গৃহপালিত গণমাধ্যম প্রতিবেদন পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
 

প্রতিবেদনে বারবার উল্লেখ করা হয়েছে—“কোনো সরকারি নথিতে অভিযোগ নেই”, “কোনো তদন্ত হয়নি”, “সব টেন্ডার পিপিআর অনুযায়ী হয়েছে”। তবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার প্রশ্ন রয়ে গেছে—দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে কি আগে সরকারি নথিতে মামলা থাকতে হবে? তদন্তের আগেই কি সংবাদ অপরাধ প্রমাণ করতে পারে, নাকি শুধুই পথ দেখায়?
 

এক দিনে ছয়টি টেন্ডার, এক পরিবার
সবচেয়ে বড় প্রশ্নটি গৃহপালিত প্রতিবেদন এড়িয়ে গেছে। ১০ মার্চ ২০২৫ তারিখে একই দিনে ছয়টি বড় প্রকল্পের টেন্ডার সবই পেয়েছে আতিকুল ইসলামের স্ত্রীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাডরয়েড কনসাল্ট্যান্টস’। এখানে e-GP থাকা স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা কি দেবে? একই পরিবারের একাধিক টেন্ডার প্রাপ্তি কি স্বচ্ছতার পরিচায়ক, নাকি সিন্ডিকেটের প্রমাণ?

 

রাজনৈতিক পরিচয় ও AI যুক্তি
প্রতিবেদনে হারুন অর রশিদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বলা হয়েছে, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কিছু এআই ছবি ও পোস্ট”। তবে বাস্তব ঘটনা—আওয়ামী লীগের বিজয় মিছিলে উপস্থিতি, ছাত্রলীগ নেতাদের সংবর্ধনা এবং দলীয় কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণ—AI ছবি দিয়ে কি মুছে ফেলা সম্ভব?

 

গৃহপালিত গণমাধ্যমের ভূমিকা
প্রতিবেদনটি স্বাধীন অনুসন্ধানী তথ্যের কোনো উল্লেখ নেই, অভিযোগকারীদের বক্তব্য নেই, শুধু অভিযুক্তের ভাষ্য হুবহু তুলে ধরা হয়েছে। এমন প্রতিবেদনে সাংবাদিকতার মান থাকলে কি থাকবে? না হলে এটি দালালির সাদৃশ্য।

 

শেষ কথা: দায়িত্বের সামনে প্রশ্ন
প্রতিবেদনটি কোনো রায় নয়, এটি শুধু প্রশ্নের তালিকা। ১০ কোটি টাকার হিসাব, এক দিনে ছয়টি টেন্ডার, পরিবারকেন্দ্রিক প্রকল্প বণ্টন, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অতীত—all মিলিয়ে প্রশ্ন একটাই: যদি ব্যবস্থাই না বদলায়, হারুনরা কেন বদলাবে? এখন দায়িত্ব দুদক, প্রধান প্রকৌশলী, অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রকৃত সাংবাদিকদের।

 

নিষিদ্ধ সিন্ডিকেটের ‘বিষবৃক্ষ’ উপড়ে ফেলা হবে, নাকি গৃহপালিত কলমে ঢেকে রাখা হবে—সেটাই এখন দেখার বিষয়।