যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে বিপুল পরিমাণ সার্ভার ও সিমকার্ড জব্দ করেছে সিক্রেট সার্ভিস। জাতিসংঘ সদরদপ্তরের কাছের একটি স্থান থেকে উদ্ধার হওয়া এসব সরঞ্জামকে কেন্দ্র করে বিশ্বনেতাদের ওপর নজরদারির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সিক্রেট সার্ভিস জানিয়েছে, জব্দ হওয়া ৩০০টি সার্ভার ও এক লাখেরও বেশি সিমকার্ডের মাধ্যমে নজরদারি, সেলুলার নেটওয়ার্ক বিঘ্নিত করা কিংবা অজ্ঞাত কোনো স্থানে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব ছিল। এ নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতি মিনিটে প্রায় ৩ কোটি বার্তা আদান-প্রদান করা যেত। তবে এসব যন্ত্রপাতি দিয়ে কার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হতো, তা এখনো অজানা।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্ধারকৃত এই নেটওয়ার্ক অবকাঠামো এতটাই বিস্তৃত যে, এর নজির অতীতে মেলেনি। যদিও জাতিসংঘ সম্মেলনের ওপর সরাসরি হুমকির সুনির্দিষ্ট প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
সম্মেলনের নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা সিক্রেট সার্ভিসের নিউ ইয়র্ক ফিল্ড অফিসের শীর্ষ এজেন্ট ম্যাট ম্যাককুল এক ভিডিও বার্তায় জানান, এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত এবং তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, নেটওয়ার্ক স্থাপনকারীরা বিশ্বনেতাদের সরকারি যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটাতে চেয়েছিল কি না, সেটিও তদন্তের আওতায় রয়েছে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, এত বড় নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা তৈরি করার সক্ষমতা কেবল কয়েকটি রাষ্ট্রের আছে—যেমন রাশিয়া, চীন ও ইসরায়েল। ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর ইউরোপিয়ান পলিসি অ্যানালিসিস-এর বিশ্লেষক জেমস এ. লুইস বলেন, সরঞ্জামের পরিমাণ ও সক্ষমতা দেখে মনে হচ্ছে এটি কোনো রাষ্ট্রীয় নজরদারি কার্যক্রমের অংশ হতে পারে।
এদিকে, সিক্রেট সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উদ্ধার অভিযানের সময় সার্ভার ও সিমকার্ড ছাড়াও প্রায় ৮০ গ্রাম কোকেইন, অবৈধ অস্ত্র, কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনও পাওয়া গেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধি নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন। ফলে ঘটনাটি ঘিরে নিরাপত্তা মহলে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।