প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটকে জনবান্ধব করতে ভোক্তার ১০ দফা সুপারিশ পেশ

প্রকাশকালঃ ১২ জুন ২০২৪ ১২:৫৩ অপরাহ্ণ ৭৫১ বার পঠিত
প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটকে জনবান্ধব করতে ভোক্তার ১০ দফা সুপারিশ পেশ

প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটকে আরও জনবান্ধব করতে ভলান্টারি কনজুমারস ট্রেনিং অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস সোসাইটি’র (ভোক্তা) পক্ষ থেকে ১০ দফা সুপারিশ পেশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এসব সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়।


এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মূদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিতে এবং মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা, বাজার সিন্ডিকেট মোকাবিলায় সরকারের উদ্যোগ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা বাজেট প্রস্তাবনা সংযোজন, বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে সরকারের অতিরিক্ত ঋণ গ্রহণ কমিয়ে আনা, ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর দমননীতির বিষয়ে বাজেটে সুস্পষ্ট ঘোষণা সংযোজন এবং স্মার্ট নাগরিক, মূল্যবোধ সম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি ও শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি।

 

এ ছাড়াও, মুঠোফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট সেবায় বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার, ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার ব্যবস্থা থেকে সরে আসা এবং ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করার সুপারিশ করা হয়েছে।

 

লিখিত বক্তব্যে বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে এসব সুপারিশ উপস্থাপন করেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক মো. খলিলুর রহমান সজল। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ৬ জুন জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেটে ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬ শত কোটি টাকা আর আয় দেখানো হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪ শত কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে সমস্যার স্বীকৃতি আছে, কিন্তু উত্তরণ ঘটিয়ে সুসময়ে ফেরার ব্যবস্থা বা দিক নির্দেশনার অভাব রয়েছে।

 

খলিলুর রহমান সজল বলেন, ‘ভোক্তা’র পক্ষ থেকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ভোক্তা বান্ধব বাজেট প্রণয়নের দাবি জানানো হলেও প্রস্তাবিত বাজেটে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি, মানুষের আয় হ্রাস, ব্যাংক ঋণখেলাপিদের দৌরাত্ম, অবৈধভাবে অর্থ পাচার ইত্যাদি বাস্তবতাকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলে ‘ভোক্তা’র কাছে প্রতীয়মান হয়নি। তাই প্রশ্ন থেকে যায়, এই বাজেট কতটা জনবান্ধব হলো?

 

তবে প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কয়েকটি ইতিবাচক দিক আছে, যেগুলো অস্বীকার করার অবকাশ নেই। মূল্যস্ফীতির চাপ মানুষের ওপর না পরার জন্য বাজেটের আকার কমিয়ে রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত না হলেও চলমান উচ্চ-মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজেটে কিছু আশ্বাস দেয়া হয়েছে। এই বাজেটে রাজস্বনীতি, মুদ্রানীতি ও বাজারভিত্তিক সুদের হারের মধ্যে একটি সমন্বয় করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সংসদ সদস্যদের করমুক্ত গাড়ী আমদানির সুবিধা বাতিল করার ঘোষণা খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ বলে তিনি জানান।

 


প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার যে লক্ষ্যমাত্রা করা হয়েছে তা অর্জনে বাজেটে গৃহীত কয়েকটি পদক্ষেপ যথেষ্ট নয় বলে ‘ভোক্তা’ মনে করে। এতে ভোক্তার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর, ভাইস চেয়ারম্যান সানোয়ার হোসেন নওরোজ, পরিচালক লুৎফর রহমান লিটন, ড. লতিফুল বারী, মহসীনুল করিম লেবু, সাইদুল আবেদীন ডলার, মিজানুর রহমান তালুকদার, নূরুন নবী, গোলাম কবীর ও ফজলুল হক উপস্থিত ছিলেন।