হবিগঞ্জে ছাত্রদল-যুবদলের অভ্যন্তরীণ বিরোধে সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৫০

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৯ জুলাই ২০২৫ ০১:৪৩ অপরাহ্ণ   |   ৩৭ বার পঠিত
হবিগঞ্জে ছাত্রদল-যুবদলের অভ্যন্তরীণ বিরোধে সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৫০

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:-

 

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পৌর সদরের বাজার এলাকায় টানা চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহতদের আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
 

সংঘর্ষের সূচনা
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ চলাকালে বিএনপি অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলার এক আসামি আজমিরীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রিক্ত করিমকে জামিন করানোর জন্য আদালতে যান ছাত্রদল নেতা মারুফ আহমেদ ও মামলার বাদী ইবজল মিয়া। বিষয়টি নিয়ে মারুফের সঙ্গে যুবদল নেতা ফকরুল ইসলামের বাকবিতণ্ডা ও পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

 

ঘটনার পরিণতি
বাকবিতণ্ডার জেরে সন্ধ্যায় মারুফ আহমদের পক্ষের কয়েকজন পৌর সদরে ফকরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মিছিল বের করে। এরই সূত্র ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষ।

 

পক্ষগুলোর বক্তব্য
ছাত্রদল নেতা মারুফ আহমেদ বলেন, "আসামির জামিন করানোর সময় ফকরুল ইসলাম আদালতের মধ্যে আমাকে মারধর করে। এরপর আমি তার বিরুদ্ধে মিছিল বের করলে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়, সেখান থেকেই সংঘর্ষ শুরু হয়।"

 

অন্যদিকে যুবদল নেতা ফকরুল ইসলাম জানান, "বিএনপি অফিস ভাঙচুর মামলার আসামি রিক্ত করিমকে জামিন করাতে মারুফ আহমেদ আর্থিক সুবিধা নেয় এবং বাদীকে জোরপূর্বক আদালতে নিয়ে যায়। আমি বাধা দিলে তারা আমার বিরুদ্ধে মিছিল বের করে, পাল্টা মিছিল থেকে সংঘর্ষে রূপ নেয়।"
 

দলীয় প্রতিক্রিয়া ও প্রশাসনের অবস্থান
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শামছুল আলম বলেন, “একটি জামিন নিয়ে ছাত্রদল ও যুবদলের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে সংঘর্ষ হয়েছে। বিষয়টি দলীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে।”

 

বানিয়াচং সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রবাস কুমার সিংহ জানান, “এক আসামির জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”
 

ঘটনার পর পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। দলীয় অভ্যন্তরীণ বিরোধ এভাবে সশস্ত্র সংঘর্ষে রূপ নেওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।