বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন, দেশে সৌর বিদ্যুৎ সম্প্রসারণে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলোর অসহযোগিতা। বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নেওয়া হলেও তাদের অনাগ্রহের কারণে সৌর বিদ্যুৎ খাত প্রত্যাশিত অগ্রগতি পায়নি।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচির আওতায় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠান-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দেশের বর্তমান জ্বালানি পরিস্থিতি তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, “গ্যাসের ঘাটতি মেটাতে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানি করতে হচ্ছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রতি ইউনিট খরচ দাঁড়ায় ১৮ থেকে ২০ টাকা, আর শিল্পে সরবরাহ করা গ্যাসের দাম পৌঁছে যায় ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।” তিনি আরও জানান, প্রতিবছর দেশে প্রায় ২০০ এমএমসিএফ গ্যাস উৎপাদন কমছে, অথচ নতুন অনুসন্ধান কার্যক্রম আশাব্যঞ্জক ফল দিচ্ছে না। এ ছাড়া অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিস্তার পরিস্থিতিকে আরও জটিল করছে—“একদিকে বিচ্ছিন্ন করা হলেও অন্যদিকে আবার সংযোগ দেওয়া হচ্ছে,” বলেন তিনি।
ফাওজুল কবির খান জোর দিয়ে বলেন, “উচ্চমূল্যের জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে একমাত্র কার্যকর সমাধান হলো নবায়নযোগ্য জ্বালানি।” তার মতে, রুফটপ সোলার প্যানেল ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এতে কোনো জ্বালানির প্রয়োজন পড়ে না।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, “যদি আমরা সৌরবিদ্যুৎ থেকে অন্তত তিন হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করতে পারি, তাহলে বিদ্যুৎ খাতের ওপর সামগ্রিক চাপ অনেকটা কমে আসবে।”
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, “বিশ্বের অনেক দেশ সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারে অনেক এগিয়ে গেছে—শ্রীলঙ্কার ৭৫ শতাংশ এবং ভারতের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে সৌর শক্তি থেকে। অথচ আমাদের দেশে এই হার মাত্র ২ থেকে ৩ শতাংশ।”
তিনি দ্রুত সৌর বিদ্যুৎ সম্প্রসারণে নীতিগত সহায়তা ও বিতরণ কোম্পানিগুলোর আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।