কুড়িগ্রামের রৌমারীর সেই এমপিওভুক্ত কলেজের অনিয়ম তদন্তে কমিটি গঠন 

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৭ আগu ২০২৫ ০৮:৪৫ অপরাহ্ণ   |   ৪১ বার পঠিত
কুড়িগ্রামের রৌমারীর সেই এমপিওভুক্ত কলেজের অনিয়ম তদন্তে কমিটি গঠন 

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-


 

কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার কিসমত উল্লাহ-বালাজান কৃষি ও কারিগরি ইনস্টিটিউটে বিভিন্ন অনিয়ম ও কলেজে অধ্যক্ষের অনুপস্থিতির অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছে উপজেলা প্রশাসন। 
 

বুধবার (২৭ আগস্ট) রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজ্জ্বল কুমার হালদার এ তথ্য প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন।
 

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও ) উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, ‘উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে সদস্যসচিব এবং প্রোগ্রাম অফিসারকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
 

এর আগে গত সোমবার কলেজটির বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় "কুড়িগ্রামের রৌমারীর এমপিওভুক্ত কলেজে নেই শিক্ষক, নেই শিক্ষার্থী; টাকায় মিলে সনদ" শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ ছাড়া কলেজটির নানা অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসনসহ কলেজ কর্তৃপক্ষ।
 

নিয়মিত উপস্থিত না থাকলেও কলেজের অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর বুধবার (২৭ আগস্ট) কলেজে উপস্থিত হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন। 
 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। পরীক্ষা শেষ হওয়ার কারণে বর্তমানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই। পরীক্ষা হওয়ার পর তো প্রতিষ্ঠান ১০-১৫ দিন বন্ধ থাকে। অন্য সময় শিক্ষার্থী আসে এবং খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেওয়া হয়।’
 

এ সময় তিনি প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। যদিও প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার স্বপক্ষে তিনি কোনও দাপ্তরিক প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি।
 

নিজের অনুপস্থিতির পক্ষে সাফাই দিয়ে লিখিত বক্তব্যে অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন বলেন, ‘কলেজের বিভিন্ন কাজে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর ও রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়সহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। ওই সময় আমি কলেজে উপস্থিত থাকি না। এ ছাড়া প্রায় সময় কলেজে থাকি।’
 

তবে অনুসন্ধানে অধ্যক্ষের এসব দাবির কোনও সত্যতা মেলেনি। পরীক্ষা শেষে গত কয়েকদিন ধরে কর্মদিবস চললেও অধ্যক্ষ কলেজে উপস্থিত ছিলেন না। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে সচরাচর কলেজে দেখেন না। বিষয়টি কলেজের অফিস সহকারী আমজাদ হোসেন স্বীকারও করেছেন।
 

গত সোমবার (২৫ আগষ্ট) অফিস সহকারী আমজাদ এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, অধ্যক্ষ বর্তমানে না আসলেও তিনি কলেজে আসেন। তার বাড়ি নীলফামারীতে। তিনি ঢাকাতেও থাকেন। তবে কলেজে আসলে তিনি এলাকায় থাকেন।
 

এদিকে কলেজটির বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর মঙ্গলবার রৌমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও ) কলেজটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। সে সময় তিনি কলেজে অধ্যক্ষ কিংবা শিক্ষক-শিক্ষার্থী কাউকে উপস্থিত পাননি। কলেজের বিভিন্ন কক্ষে তালা ঝুলতে দেখেন।
 

রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও ) উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, ‘কলেজটির অধ্যক্ষের নিয়মিত উপস্থিত না থাকা এবং বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর মঙ্গলবার আমি কলেজটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। কিন্তু কলেজে অধ্যক্ষসহ কাউকে পাওয়া যায়নি। কক্ষগুলোতে তালা দেওয়া ছিল। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’