আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:-
ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কায় ক্ষেতের পাকা বোরো ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পাড় করছে কুড়িগ্রামের কৃষকরা। এখন পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে ৩০ ভাগ ধান কাটার কাজ। তারা জানান, কষ্ট করে আবাদ করা পরিবারের নির্ভরতার এ ফসল প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়লে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হবে তাদের। আর হারভেস্টার মেশিন দিয়ে হলেও ক্ষেতের পাকা ধান দ্রুত ঘরে তোলার পরামর্শ কৃষি বিভাগের।
বুধবার (১৫ মে) সকালে সরিজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফসলের মাঠেই ধান মারাই করছেন অনেক কৃষক। আবার কেউ শ্রমিক দিয়ে কেটে নিচ্ছেন ক্ষেতের পাকা ধান। আর যাদের ক্ষেতে ধান এখনও পরিপক্ব হয়ে উঠেনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। সবার লক্ষ্য ঝড়-বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হওয়ার আগেই ঘরে ধান তোলা।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার অচিনগাছ এলাকার এই দৃশ্য এখন জেলার সর্বত্রই। এ বছর কোনো প্রকার রোগ-বালাইয়ের কবলে পড়েনি ধানক্ষেত। পাশাপাশি ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা খুশি হলেও বৈরী আবহাওয়ায় চিন্তিত তারা।
কৃষকরা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভোগান্তি ছাড়াই মাঠের ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ততা তাদের। তবে কৃষি যান্ত্রিকী করনে চাষাবাদের পদ্ধতি সহজ হলেও সার-কীটনাশকসহ উচ্চমূল্যের আবাদে ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত তারা।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার অচিনগাছ এলাকার কৃষক আবেদ আলী জানান, খুব ভয়ে আছি, আকাশের যে অবস্থা। কখন জানি শিলাবৃষ্টি হয়, ঝড় হয়। আর ঝড় হলেও কাঁচা-পাকা সব ধানেরই ক্ষতি হবে। এজন্য তাড়াতাড়ি ধান ঘরে তুলতে মাঠেই মাড়াই করছি।
একই এলাকার আরেক কৃষক হরিপদ জানায়, আমরা অনেক খরচ করে ধান আবাদ করি কিন্তু সরকারি দাম পাই না। গুদামে ধান দিতে গেলে মিটার পাশ সহ নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। এজন্য ধার কাটার পর বাড়িতে পাইকারদের নিকট বিক্রি করে দেই। আমরা কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছি না।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কৃষি বিভাগের গত বছরের চেয়ে এ বছর ধানের আবাদ হয়েছে বেশি পরিমাণ জমিতে। এ পর্যন্ত কর্তন করা হয়েছে ৩০ ভাগ ধান। আমরা কৃষকদের কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে হলেও দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দিচ্ছি।
গত বছর জেলায় ১ লাখ ১৬ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হলেও এ বছর হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে। আর চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ সাড়ে ৬ হাজার মেট্রিক টন।