ঢাকা প্রেস,আন্তর্জাতিক ডেস্ক:-
ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ নারীদের জন্য প্রস্তাবিত কঠোর পোশাকবিধি আইন স্থগিত করেছে। আগামী শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) থেকে আইনটি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল, তবে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এই আইনটিকে ‘অস্পষ্ট ও সংস্কারের প্রয়োজন’ বলে অভিহিত করে এর ধারাগুলো পুনর্মূল্যায়নের ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবরটি বিবিসির।
ইরানের শাসকরা কয়েক দশক ধরে নারীদের পোশাকবিধিকে জাতীয় নিরাপত্তার অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করে আসছেন। তবে, গত জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে পেজেশকিয়ান হিজাব ইস্যুতে ইরানি নারীদের প্রতি সরকারের আচরণ সমালোচনা করেন। তিনি নারীদের ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ না করার প্রতিশ্রুতি দেন, যা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছিল এবং তাকে জনপ্রিয়তা এনে দেয়।
প্রস্তাবিত নতুন আইনে নারীদের চুল, হাত বা পায়ের নিচের অংশ প্রকাশ করার জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল, যারা বারবার নিয়ম ভঙ্গ করবে বা যারা নিয়ম নিয়ে উপহাস করবে, তাদের বড় অঙ্কের জরিমানা এবং সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হবে।
আইনটি প্রকাশ্যে আসার পরপরই ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। অধিকারকর্মীরা দাবি করেন যে, ইরানি কর্তৃপক্ষ ‘আগের শ্বাসরুদ্ধকর দমনমূলক ব্যবস্থাকে আরও কঠোর করতে চাইছে’। গত সপ্তাহে তিনশোরও বেশি ইরানি অধিকারকর্মী, লেখক এবং সাংবাদিক নতুন হিজাব আইনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নিন্দা জানান। তারা আইনটিকে ‘অবৈধ এবং অকার্যকর’ বলে অভিহিত করে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানকে তার নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি রক্ষার আহ্বান জানান।
পেজেশকিয়ানের সমর্থকদের বিশ্বাস, নতুন হিজাব আইন তরুণ নারীদের এটি লঙ্ঘন করা থেকে বিরত রাখতে ব্যর্থ হবে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। তবে, আইনটির সমর্থকরা প্রেসিডেন্টের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন এবং আইনটি কার্যকর করার জন্য দ্রুত স্বাক্ষরের দাবি জানিয়েছেন।