চার দেশের শিল্পীরা এক সিনেমায় ক্যামেরা বন্দী

প্রকাশকালঃ ২২ আগu ২০২৩ ১২:৩১ অপরাহ্ণ ১৮১ বার পঠিত
চার দেশের শিল্পীরা এক সিনেমায় ক্যামেরা বন্দী

কেকজন একেক দেশের। তাঁরা কেউ থিয়েটারচর্চা করেন, কেউ টেলিভিশন নাটক, কেউবা সিনেমা–ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেন। বাংলাদেশ, ভারত, কলম্বিয়া, যুক্তরাষ্ট্র—এই চার দেশের শিল্পীরা এক সিনেমায় ক্যামেরায় বন্দী হলেন। ‘ফ্লাশ ইট’ নামে একটি সিনেমায় অভিনয় করছেন তাঁরা। এ সিনেমার শুটিং হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। গত মে মাসের মাঝামাঝি ছবিটির শুটিং শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি, কানেটিকাট ও পেনসিলভানিয়ার বিভিন্ন লোকেশনে ছবিটির শুটিং হয়েছে।

‘ফ্লাশ ইট’ পরিচালক রনি ভৌমিক ২০২১ সালে ‘মৃধা বনাম মৃধা’ পরিচালনা করে প্রশংসিত হন। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। গত সোমবার হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। রনি বলেন, ‘শুটিং শেষের পথে। মিলন (আনিসুর রহমান) ভাই ছাড়া বিদেশিদের বেশির ভাগই টেলিভিশন ও থিয়েটারকর্মী।’ পরিচালক আরও বলেন, ‘ছবিতে চার দেশের শিল্পীরা নিজস্ব ভাষায় সংলাপ দিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের ভাষা মিলিয়ে পৃথিবীতে অনেক সিনেমা তৈরি হয়েছে। আমার এই ছবিতে বাংলা ও ইংরেজি ভাষা বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। তবে ছবির কিছু কিছু জায়গায় হিন্দি ও স্প্যানিশ ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে।’


‘মৃধা বনাম মৃধা’ ছবির কাজ শেষেই ‘ফ্লাশ ইট’–এর প্রিপ্রোডাকশনের কাজ শুরু করেন পরিচালক রনি ভৌমিক। শুটিং শুরুর আগে মাসখানেক ধরে চিত্রনাট্য নিয়ে শিল্পীদের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে আলাপ করেছেন। একটা সময় সবাইকে একসঙ্গে করে অনুশীলনও করেছেন। বিদেশি শিল্পীদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা খুবই ভালো বললেন। রনি ভৌমিক বলেন, ‘যেহেতু সবাই ইংরেজি বোঝেন, ফলে কাজটির সমন্বয় ভালো ছিল। আমার কাছে মনে হয়, বিদেশিরা কাজটা সিরিয়াসলি করে, মনোযোগ দিয়ে করে। ফলে আমার জন্য সহজ হয়েছে কাজটি।’

‘ফ্লাশ ইট’ ছবির গল্প প্রসঙ্গে পরিচালক জানালেন, বাংলাদেশ থেকে আসা একজন সাধারণ মানুষের চোখে স্বপ্নের আমেরিকা আবিষ্কারের গল্প। সেই পথচলায় উত্থান, পতন, প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি আর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা থাকবে। মূলত এটি একটি সিচুয়েশনাল কমেডি। নিউইয়র্কের ছোট একটা ইস্যু থেকে এ ছবির গল্পের সূত্রপাত। বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া সাধারণ মানুষ আলমের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনিসুর রহমান মিলন। এরই মধ্যে তাঁর অংশের শুটিং শেষ। এখন তিনি বাংলাদেশে আছেন।

অভিনেতা মিলন বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর একটি সমস্যার মুখোমুখি হই, যা আমার কাছে সর্বজনীন সমস্যা। এটি সমাধান করতে গিয়ে আরও অনেক ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকে। অনেক বড় ঝামেলার মুখোমুখি হই।’ সহশিল্পীরা সবাই বিদেশি। তাঁদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বুঝলাম, ভাষা ব্যাপার নয়। একে অপরের সঙ্গে সহজে কানেক্ট করতে পেরেছি। ছবির গল্প কমেডি ধাঁচের। আমরা হাস্যরসের মাধ্যমে অভিনয়টা করেছি। শুটিংয়ে অনেক মজা করেছি।’


ছবিতে মিলনের সহশিল্পী কলম্বিয়ার জিমেনা এরিকা। তিনি সেখানকার ব্রডওয়ে থিয়েটারের কাস্টিং ডিরেক্টার ও অভিনেতা। এরিকা সম্পর্কে মিলন বলেন, ‘মাঝেমধ্যে এরিকাকে নিয়ে খুব মজা হতো। কোনো দৃশ্যের ধারণ শেষে তা ভালো না মন্দ হয়েছে, এ নিয়ে পরিচালক রনি যখন আমার সঙ্গে বাংলায় কথা বলত, এরিকা হাঁ করে তাকিয়ে থাকতেন। পরে আমাদের পুরো কথোপকথন ইংরেজিতে বুঝিয়ে দিতে হতো তাঁকে। শুটিংয়ে আমরা বলি না, “চল চল চল শট নিই।” একটা সময় এরিকা বাংলা শিখে কিছুক্ষণ পরপর ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে বলতেন, “চল চল চল।” শুনে খুব মজা পেতাম আমরা।’

ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন গ্যাব্রিয়েলা মরেনো (কলম্বিয়া), প্রিতম চৌধুরী (বাংলাদেশ), রেমন্ড ক্রামডাইক, ফিলিপ ডোনেহ, স্কট লয়ের, বিল ফথ, সিলভিয়া, অলিভ, দুররে মাকনুন, সানিয়া প্রভাক (যুক্তরাষ্ট্র), নিঝুম বড়ুয়া (ভারত) প্রমুখ। পরিচালক জানিয়েছেন, ফ্লাশ ইট মুক্তির তারিখ এখনো ঠিক হয়নি। তবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রে একই সঙ্গে মুক্তি পাবে। ছবির গল্প লিখেছেন অপূর্ব পাল, সংলাপ স্নেহাশিস চক্রবর্তী ও নোভা ফিরোজ। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন সাহা। এই ছবির নির্বাহী প্রযোজক অভিনেত্রী নোভা ফিরোজ।