নিম একটি প্রাকৃতিক ওষুধ, যার গুণাগুণ হাজার বছর ধরে আয়ুর্বেদসহ নানা প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্রে স্বীকৃত। প্রতিদিন খালি পেটে কয়েকটি কচি নিম পাতা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস শরীরের জন্য হতে পারে আশ্চর্যজনকভাবে উপকারী। বিশেষত সকালে খালি পেটে নিম পাতা খেলে তা শরীরের ভেতরের বিভিন্ন সমস্যার প্রতিকার করে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
নিম পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি-ভাইরাল উপাদান, যা শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। খালি পেটে ৩-৪টি কচি নিম পাতা চিবিয়ে খেলে গ্যাস্ট্রিক, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেট ফাঁপার মতো সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
নিম পাতার মধ্যে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড, গ্লাইকোসাইড, টারপেনয়েড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এটি প্রাকৃতিক এক সহায়ক হিসেবে কাজ করতে পারে।
নিম পাতা শরীরকে ভেতর থেকে ডিটক্স করে, যার ফলে ত্বক পরিষ্কার থাকে এবং ব্রণের প্রকোপ কমে। নিয়মিত নিম পাতা খেলে ত্বকে ন্যাচারাল গ্লো ফিরে আসে এবং ত্বক হয় স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
নিম লিভারকে ডিটক্স করতে সাহায্য করে এবং বিপাকক্রিয়া উন্নত করে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখতে পারে। সকালে খালি পেটে নিম পাতা খেলে লিভারের কার্যকারিতা বাড়ে এবং শরীর থাকে ঝরঝরে।
প্রতিদিন খালি পেটে নিম পাতা চিবালে দাঁতের গর্ত প্রতিরোধ হয়, মুখের দুর্গন্ধ দূর হয় এবং মাড়ির প্রদাহ কমে। এটি দাঁতের জন্য প্রাকৃতিক টুথপেস্টের মতো কাজ করে।
সর্দির সমস্যা হলে নিমপাতা বেটে তার রস হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এটি গলা পরিষ্কার করে এবং কফ দূর করতে সাহায্য করে।
খুশকির সমস্যা থাকলে নিমপাতা সিদ্ধ করে সেই পানি মাথায় লাগিয়ে ভালোভাবে চুল ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে খুশকি কমে এবং মাথার ত্বক সুস্থ থাকে।
সতর্কতা:
নিম পাতা শক্ত ও তিক্ত হওয়ায় অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। যেকোনো শারীরিক জটিলতা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিমপাতা খাওয়ার অভ্যাস শুরু করাই উত্তম।