সড়কের বিশৃঙ্খলা, অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন ও দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কারণে যানজট এখন রাজধানীবাসীর নিত্যসঙ্গী। দিন হোক বা রাত—যেকোনো সময়েই ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে যানজটে। ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল কিংবা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মতো হাজার হাজার কোটি টাকার অবকাঠামো নির্মাণের পরও যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
ঢাকার যানজট এখন চরম পর্যায়ে। নিত্যদিনের কাজে ব্যস্ত নগরবাসী যানজটের কাছে অসহায় হয়ে পড়ছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, যানজটের কারণে শুধু ঢাকাতেই প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে প্রায় ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা, যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে দাঁড়ায় প্রায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা।
সম্প্রতি যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন সড়কে ইউটার্ন বন্ধ ও নতুন ইউটার্ন চালু করেছে ট্রাফিক বিভাগ। তবে এতে কার্যত কোনো সুফল মেলেনি। বরং সড়ক সরু হয়ে যানজট আরও তীব্র হয়েছে বলে অভিযোগ চালকদের।
এদিকে, ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২২টি মোড়ে বসানো স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যালও আশানুরূপ কাজ করছে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এখনো পুলিশ সদস্যরা হাতের ইশারায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছেন। তার ওপর সারা বছর চলতে থাকা খোঁড়াখুঁড়ি ও নির্মাণকাজ যানজটের ভোগান্তি বহুগুণ বাড়িয়ে তুলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর যানজট নিরসনে বিকেন্দ্রীকরণ জরুরি। পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ ও বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এই দুরবস্থা কাটানো সম্ভব নয়।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান বলেন, “বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, বিআরটিএ ও সিটি করপোরেশনের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। সড়কের সক্ষমতা বিবেচনা না করেই গাড়ির লাইসেন্স ও আমদানি অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।”
এ অবস্থায় নগরবাসী চান বাস্তবসম্মত ও কার্যকর উদ্যোগ, যা যানজটের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেবে তাদের।