প্রকাশকালঃ
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৪:৫৭ অপরাহ্ণ ২৮৫ বার পঠিত
শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো খুবই প্রয়োজন। কারণ কোনো মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকলে সে সহজে যে কোনো রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই রোগ জীবাণু ও সংক্রমণ রোধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করা প্রয়োজন। এ সময়ে ঠাণ্ডা-জ্বর, হাঁচি-কাশিতে আক্রান্ত হন অনেকেই। এসব রোগ দূরে রাখতে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন।
কিছু খাবার রয়েছে যা আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। আসুন জেনে নিই এমন কিছু খাবার সম্পর্কে। যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
আমলকি
ভেষজ গুণে অনন্য একটি ফল আমলকি। বিভিন্ন অসুখ সারানো ছাড়াও আমলকী রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে দারুণ সাহায্য করে। আমলকীর গুণাগুণের জন্য আয়ুর্বেদিক ওষুধেও এখন আমলকীর নির্যাস ব্যবহার করা হয়। আমলকীতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, আমলকীতে পেয়ারা ও কাগজিলেবুর চেয়ে তিন গুণ ও দশ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। আমলকীতে কমলালেবুর চেয়ে ১৫ থেকে ২০ গুণ বেশি, আপেলের চেয়ে ১২০ গুণ বেশি, আমের চেয়ে ২৪ গুণ এবং কলার চেয়ে ৬০ গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে।
এটি গরম পানির সঙ্গে খেতে পারেন বা খালি পেটেও খেতে পারেন। এর রসও পান করা যায়। এটি অ্যান্টি–অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ। খালি পেটে খাওয়ার সময় অভ্যন্তরীণভাবে আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে, যা আমাদের ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
আদা
গলা প্রশমিত করে এবং বুকে জমা কফ থেকে মুক্তি দিতে কাজ করে আদা। প্রতিদিন আদা চা খাওয়ার অভ্যাস আছে অনেকেরই। এটি আমাদের সুস্থতার জন্য নানাভাবে কাজ করে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেশন বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ আদা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও দারুণ কার্যকরী। এটি আমাদের প্রায় সবার রান্নাঘরেই পাওয়া যাবে।
গুড়
চিনির বিকল্প এই খাবারে শরীর উষ্ণ রাখার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। রক্তস্বল্পতায় গুড় সমান কার্যকরী কারণ এতে থাকে প্রচুর আয়রন। শীতের সময়ে আয়রনের মাত্রা পর্যাপ্ত রাখা জরুরি। কারণ আয়রনের পরিমাণ কমে গেলে শরীরে অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা দিতে পারে। ফলে শীত বেশি অনুভূত হয়। গুড় খেলে তা আমাদের ফুসফুস পরিষ্কারেও কাজ করে। তাই এটি শীতের সময়ে বেশি উপকারী।
নিমপাতা
খালি পেটে নিমপাতা-বাটা খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়। এ ছাড়া ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া রোধী উপাদান যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
রসুন
প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় রসুনের ব্যবহার চলে এসেছে। রসুনের মধ্যে পাওয়া যায় ক্যালসিয়াম‚ কপার‚ পটাশিয়াম‚ ফসফরাস‚ আয়রন ও ভিটামিন বি ওয়ান। রসুন অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে। যা প্রাকৃতিক ভাবে সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও রসুন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হার্ট ও ফুসফুস কে ভালো রাখতে সাহায্য করে রসুন। সকালে খালি পেটে রসুন খেলে এই রকম অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে ১- ২ কোয়া রসুন উষ্ণ গরম জলের সাথে খাওয়া যেতে পারে।
মধু
যাবতীয় রোগ নিরাময়ে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মধুর গুণ অপরিসীম। মধুতে যেসব উপকরণ রয়েছে, তার মধ্যে প্রধান উপকরণ হলো সুগার বা চিনি, আর যেটা আমরা অনেকই এড়িয়ে চলি। কিন্তু মধুতে গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ—এ দুটি সরাসরি মেটাবলাইজড হয়ে যায় এবং ফ্যাট হিসেবে জমা হয় না।
লেবু
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায় লেবু থেকে। এই ভিটামিন শরীরকে সুস্থ রাখতে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে কাজ করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ওজন কমাতেও সহায়ক এটি। টি মূলত অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-সেপটিক। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিকভাবে উপস্থিত ভিটামিন সি উপাদান থাকায় এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। প্রতিদিন প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি গ্রহণ করতে হবে।
হলুদ
প্রাচীন কাল থেকেই রোগ প্রতিরোধক ও জীবাণুনাশক হিসেবে যেসব উপাদানকে চিহ্নিত করা হয়, তার মধ্যে অন্যতম হলো হলুদ। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানেও গুণাগুণ বিচারে হলুদ জায়গা পেয়েছে। কাঁচা ও শুকনা হলুদের গুঁড়াতে আছে প্রচুর পরিমাণে কারকিউমিন যৌগ, যা আসলে একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। কাঁচা হলুদে আছে ভিটামিন সি। সুতরাং নিয়ম করে প্রতিদিন কাঁচা হলুদ খাওয়া ও রান্নায় হলুদ ব্যবহার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।