ঢাকা প্রেস,স্পোর্টস ডেস্ক:-
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য সময়টা ভালো যাচ্ছিল না। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে টানা সিরিজ হারের পর টাইগাররা ক্যারিবিয়ান মাটিতে পৌঁছেছিল পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে। সেখানে দুই টেস্টের সিরিজ ড্র হওয়ার পর ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায়ও পুড়তে হয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত, মধুর প্রতিশোধের সুযোগ এনে দেয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচ জিতে ইতোমধ্যে সিরিজ নিশ্চিত করেছে লিটন দাসের দল। আজ ক্যারিবিয়ানদের তাদেরই মাটিতে ২৭ রানে হারিয়ে ছয় বছর পর সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। সেইন্ট ভিনসেন্টের অ্যারন্স ভ্যালেতে লো স্কোরিং ম্যাচটি জিতে টাইগাররা অর্ধযুগ পর ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। মাত্র ৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার লিটন। ৪ বলে ২ রান করে তিনি ফিরে যান তানজিদ তামিমও। তবে সৌম্য সরকারকে সঙ্গে নিয়ে মিরাজ চেষ্টা করেন রান তোলার, কিন্তু দুজনের কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। সৌম্য ১১ রানে রান আউট হলে ২৬ রান করে মিরাজও ফিরে যান। এরপর ৫ রানে আউট হন রিশাদ, ফলে দলের স্কোর দাঁড়ায় ৫২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে। এরপর মাহেদী হাসানও ১১ বলে ১১ রান করে ফিরে যান।
এইদিন ব্যাট হাতে কোনো বড় ইনিংস খেলতে পারেননি জাকের আলী। ২০ বলে ২১ রান করে তিনি ফিরে যান। দলের স্কোর তখন ১৬.১ ওভারে ৮৮ রান। হাতে তিন উইকেট বাকি। মনে হচ্ছিল, একশোও পেরোনো কঠিন হবে। তবে, ক্রিজে নেমে দারুণ একটি ক্যামিও খেলেন শামীম পাটোয়ারী। ১৭ বলে দুই চার ও দুই ছয়ে ৩৫ রান করে দলের জন্য সম্মানজনক স্কোর দাঁড় করান তিনি। ১১ বলে ৯ রান করে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন তানজিম সাকিব। এভাবে ১২৯ রানের লড়াকু পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২ উইকেট নেন গুদাকেশ মোতি। রোস্টন চেজ, আকিল হোসেইন, আলজারি জোসেফ ও ওবেদ ম্যাকওয়ে একটি করে উইকেট নেন।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে দারুণ খেলছিলেন ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং এবং জনসন চার্লস। দুজনে মিলে প্রথম দুই ওভারে তুলে ফেলেন ১৯ রান। তবে তৃতীয় ওভারে এসে তাসকিন আক্রমণ করেন। তার প্রথম বলেই কট বিহাইন্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন কিং। চার বল পরেই একইভাবে ফেরান ফ্লেচারকে। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ক্যারিবিয়ানরা। চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলেই মাহেদী হাসান ফেরান জনসন চার্লসকে, আর পঞ্চম ওভারে নিকোলাস পুরানকে। অষ্টম ওভারে মাহমুদ রোস্টন চেজের উইকেট তুলে নেন এবং নবম ওভারের তৃতীয় বলেই সাকিব ফেরান রোমারিও শেফার্ডকে। ৪২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
মাঝে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন রোস্টন চেজ। তিনি আকিল হোসেইনকে সঙ্গে নিয়ে দলের রান বাড়ানোর চেষ্টা করেন। ১৬তম ওভারে হাসান মাহমুদকে দুই ছক্কা হাঁকান চেজ। কিন্তু পরের ওভারেই রিশাদ এসে চেজ ও মোতিকে সাজঘরে ফেরান। পরের ওভারে সাকিব আলজারি জোসেফকে তুলে নেন। এক দফায় ৮৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর দাঁড়ায় ৯০ রানে ৯ উইকেট।
শেষপর্যন্ত তাসকিন সেই পরিণতিটাই নিশ্চিত করেন, যার হাত দিয়েই প্রথম উইকেটটি পড়েছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস থামে ১০২ রানে, ২৭ রানের দারুণ জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।