প্রকাশকালঃ
১২ জুন ২০২৪ ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ ১২৭ বার পঠিত
অন্তর কঠিন হওয়া থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার প্রথম ও প্রধান উপায় হলো আল্লাহর রহমত, ক্ষমা ও শাস্তি সম্পর্কে জানার মাধ্যমে অন্তর নরম করার চেষ্টা করা এবং আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করা। ইরশাদ হয়েছে, ‘যিনি (আল্লাহ) পাপ ক্ষমাকারী, তাওবা কবুলকারী, কঠোর শাস্তিদাতা ও সামর্থ্যবান, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তাঁরই দিকে হবে প্রত্যাবর্তন।’ (সুরা : গাফির/মুমিন, আয়াত : ৩)
নিম্নে অন্তর নরম হওয়ার কিছু নেক আমল উল্লেখ করা হলো—
কোরআন তিলাওয়াত করা
কোরআন তিলাওয়াত করার মাধ্যমে অন্তর নরম হয়। সম্ভব হলে এর অর্থ বুঝে পড়বে। এতে আরো বেশি ফায়দা হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন উত্তম বাণীসংবলিত কিতাব, যা সুসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং যা পুনঃ পুনঃ আবৃত্তি করা হয়। এর মাধ্যমে যারা তাদের রবকে ভয় করে, তাদের গাত্র রোমাঞ্চিত হয়। অতঃপর তাদের দেহমন বিনম্র হয়ে আল্লাহর স্মরণে ঝুঁকে পড়ে...।’ (সুরা : জুমার, আয়াত : ২৩)
অন্তরকে পরকালমুখী করা
পরকালমুখী অন্তর বিনম্র হয়। অন্তরকে বোঝাতে হবে যে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবনের পরে আছে আখিরাতের অনন্তকালীন জীবন। সে জীবনের তুলনায় এই নশ্বর জীবন নিতান্তই তুচ্ছ ও নগণ্য। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কসম! আখিরাতের তুলনায় দুনিয়ার উদাহরণ হলো যেমন তোমাদের কেউ মহাসাগরের মধ্যে নিজের একটি আঙুল ডুবিয়ে দেয়, এরপর সে লক্ষ করে দেখুক তা কী (পরিমাণ পানি) নিয়ে এলো।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৮৫৮)
কবর জিয়ারত করা
কবর জিয়ারত মানুষের অন্তরকে নরম করে দেয়। কোনো মানুষ যদি কবরের কাছে গিয়ে এই চিন্তা করে যে এই কবরে যে আছে সে একদিন দুনিয়াতে আমার মতো জীবনযাপন করত। আজ সে নেই। তার দেহ মাটি হয়ে গেছে, তার সম্পদ তার ছেলে-মেয়েরা ভাগ করে নিয়েছে। আমাকেও একদিন তার মতো কবরে যেতে হবে। তাহলে অন্তর নরম হবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমি প্রথমে তেমাদের কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, এখন থেকে তোমরা কবর জিয়ারত কোরো। কেননা এটা অন্তরকে নরম করে।’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ১৩৪৮৭)
বেশি বেশি আল্লাহর স্মরণ
অন্তরের কঠিনতা আল্লাহর জিকির ছাড়া দূর হয় না। আল্লাহর স্মরণে অন্তর নরম হয়। আল্লাহ বলেন, ‘(বিনয়ী হলো তারা) যাদের অন্তর আল্লাহর নাম স্মরণ করা হলে ভীত হয় এবং যারা তাদের বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণ করে।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ৩৫)
সৎলোকদের সঙ্গী হওয়া
সৎলোকদের সঙ্গে থাকা, তাদের সঙ্গে চলাফেরা করা এবং তাদের থেকে উপদেশ নেওয়ার মাধ্যমে মানুষের অন্তর নরম থাকে। আল্লাহ বলেন, ‘আপনি নিজেকে তাদের সৎসঙ্গে আবদ্ধ রাখুন, যারা সকাল-সন্ধ্যায় তাদের পালনকর্তাকে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে আহ্বান করে এবং আপনি পার্থিব জীবনের সৌন্দর্য কামনা করে তাদের থেকে নিজের দৃষ্টি ফিরিয়ে নেবেন না। যার মনকে আমার স্মরণ থেকে গাফিল করে দিয়েছি, সে নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে এবং যার কার্যকলাপ হচ্ছে সীমা অতিক্রম করা, আপনি তার আনুগত্য করবেন না।’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ২৮)
দোয়া করা
দোয়া প্রত্যেক মুমিনের প্রধান হাতিয়ার এবং অন্তরের কঠিনতা থেকে পরিত্রাণকারী। অন্তরকে সুস্থ ও সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য মহান আল্লাহ মানুষকে এভাবে দোয়া করতে শিখিয়েছেন—‘হে আমাদের রব! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্য-লঙ্ঘনপ্রবণ কোরো না। আর তোমার কাছ থেকে আমাদের ওপর রহমত নাজিল কোরো। নিশ্চয়ই তুমি মহাদাতা।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৮)