কুমিল্লার দেবিদ্বারে আলোচিত করিম ভূঁইয়া হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে স্ত্রী তাছলিমা বেগম তিন ভাইকে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে খুন করেন বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তারা।
পুলিশ জানায়, গত ১৩ আগস্ট সকাল থেকে বড়শালঘর মন্ত্রীবাড়ি এলাকার মৃত আবুল কাশেম ভূঁইয়ার ছেলে আব্দুল করিম ভূঁইয়া নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় তার ভাই আমির হোসেন থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। নিখোঁজের এক মাস ৫ দিন পর, ১৭ সেপ্টেম্বর, করিমের শ্বশুরবাড়ি রসুলপুর গ্রামের একটি টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়।
পরে স্ত্রী তাছলিমা বেগম এবং তার তিন ভাই—ইসরাফিল, গোলাম হাক্কানী ও মোজাম্মেল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লার আদালতে জবানবন্দি দেন।
তদন্তে জানা যায়, করিম ভূঁইয়া নিয়মিত মাদক সেবন করতেন এবং নেশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাছলিমা তিন ভাইকে নিয়ে স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৩ আগস্ট রাতে করিমকে মাদকের প্রলোভন দেখিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নেয় ইসরাফিল। সেখানে তিন ভাই মিলে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই করিমের মৃত্যু হয়। পরে স্ত্রী তাছলিমা রক্ত পরিষ্কার করেন এবং মরদেহ খালে ফেলে দেন। কিন্তু সকালে লাশ ভেসে উঠলে আবারও তারা সেটি তুলে এনে হাত-পা বেঁধে শ্বশুরবাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ফেলে রাখেন।
দেবিদ্বার থানার ওসি সামছুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, দীর্ঘ তদন্ত ও নজরদারির পর আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জবানবন্দির ভিত্তিতে হত্যার রহস্য পুরোপুরি উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।