বিশেষ প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ:
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে পূর্বশত্রুতা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার খাগকান্দা লঞ্চঘাট এলাকায় এ সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১২ জন আহত হন।
স্থানীয়রা জানান, খাগকান্দা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ ও বিএনপি কর্মী কামাল হোসেনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। দেড় মাস আগে পূর্বশত্রুতার জেরে কামালের ভাই আনোয়ার হোসেনের হামলায় গুরুতর আহত হন আব্দুল আজিজ। দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে তিনি সদ্য বাড়ি ফেরেন।
এর মধ্যে বৃহস্পতিবার এলাকায় ফিরে আসেন আনোয়ার হোসেন। বিষয়টি জানাজানি হলে উত্তেজনা ছড়ায়। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে খাগকান্দা লঞ্চঘাটের একটি চায়ের দোকানে আনোয়ারকে দেখে আব্দুল আজিজের অনুসারীরা তাঁর ওপর হামলা চালান। আনোয়ার দৌড়ে বাড়িতে পৌঁছালে তাঁর স্বজনরাও দেশি অস্ত্র নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। পরে উভয়পক্ষই অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে মোকাবেলায় নামলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনায় গুরুতর আহতদের মধ্যে রয়েছেন কামাল হোসেন, বাবুল হোসেন, নাসির উদ্দিন, জাকির হোসেন, আনোয়ার হোসেন, আব্দুর রহিম, লোকমান হোসেন, রবিউল ইসলাম ও নবী হোসেন। এদের মধ্যে কামাল, বাবুল ও নাসিরকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে এবং লোকমান, রবিউল ও নবীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর থানায় অভিযোগ দাখিল করতে গেলে উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে আবারও বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতির সৃষ্টি হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
বিএনপি কর্মী কামাল হোসেন অভিযোগ করেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল আজিজ ও তাঁর লোকজন দীর্ঘদিন ধরে তাদের ওপর নির্যাতন করে আসছেন। তাঁর দাবি, পরিকল্পিতভাবে তাঁর ভাই ও স্বজনদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল আজিজ বলেন, দেড় মাস আগে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়েছিল। গতকাল তাঁর ছেলে, ভাই ও ভাতিজার ওপর ফের হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় তারা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসির উদ্দিন জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এক পক্ষ লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, অন্যপক্ষও অভিযোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।