প্রায় হারিয়ে যাওয়া রোমানিয়ার শ্রমবাজারে আবারও বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ উন্মোচিত হয়েছে। রোমানিয়ার কনস্যুলার মিশন, যা গত বছর তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরে গিয়েছিল, আবার ঢাকায় আসছে। আগামী জানুয়ারিতে ঢাকায় বসে তারা ভিসা ইস্যু কার্যক্রম শুরু করবে। রোমানিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নিয়োগকর্তাদের চাহিদার ভিত্তিতে এই মিশন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, আগে ইস্যু করা মেয়াদোত্তীর্ণ ওয়ার্ক পারমিটগুলো ১৫ জানুয়ারি থেকে ১২৫ ইউরো ফি দিয়ে নবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, গত দুই বছরে যারা আবেদন করে অপেক্ষায় ছিলেন, তাদের বিষয়গুলো পুনর্বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছে রোমানিয়ার অভিবাসন মন্ত্রণালয়। এ জন্য নিয়োগকর্তারা পুরনো ওয়ার্ক পারমিট নবায়নের সুযোগ পাচ্ছেন।
২০২২ সালে ঢাকায় অবস্থান করে রোমানিয়ার কনস্যুলার মিশন সাড়ে ৫ হাজার ভিসা ইস্যু করেছিল। পরের বছর ১৫ হাজার ভিসা ইস্যুর পরিকল্পনা থাকলেও, কিছু জটিলতার কারণে মিশনটি কাজ বন্ধ করে চলে যায়। অভিযোগ রয়েছে, অনেক বাংলাদেশি কর্মী রোমানিয়া গিয়ে পালিয়ে ইতালিসহ ইউরোপের অন্য দেশে চলে যাওয়ায় রোমানিয়া ক্ষুব্ধ হয়েছিল। তবে এর বাইরেও মিশন বন্ধের পেছনে প্রশাসনিক তদবির ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
জনশক্তি রপ্তানিকারকদের মতে, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। প্রায় ২০ হাজার বাংলাদেশি ভিসার অপেক্ষায় আছেন, যারা আগের সুযোগ হারিয়েছিলেন। এবার তাদের সমস্যার সমাধান হতে পারে। তবে, সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে। ভিসা ইস্যুর প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি ও প্রশাসনিক তদবিরের কারণে পূর্বে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা এড়ানো জরুরি।
রপ্তানিকারকরা দাবি করেছেন, রোমানিয়ার মিশন বন্ধের পেছনের আসল কারণ অনুসন্ধানের জন্য গভীর তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। বিশেষত, কনস্যুলার কর্মকর্তাদের ওপর তদবির, ভিসা প্রতি অর্থ আদায়ের অভিযোগ এবং তাদের নিরাপত্তার হুমকির বিষয়গুলো তদন্ত করা হলে প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হতে পারে।
এবারের সুযোগটি কাজে লাগাতে হলে, সুশৃঙ্খল ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। রোমানিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশি শ্রমবাজারের পুনরুদ্ধার বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।