বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বৈঠক রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে
প্রকাশকালঃ
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০২:২২ অপরাহ্ণ ২১৩ বার পঠিত
জোরপূর্বক মিয়ানমারের নিজ ভিটা থেকে উচ্ছেদ হওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের দিনক্ষণ ঠিক করতে রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম পয়েন্টে বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সেতুতে ব্যাটালিয়ান কমান্ডার পর্যায়ের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর কক্সবাজারস্থ ৩৪ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লে. কর্ণেল আবু বক্কর সিদ্দিক সাইমুম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, উভয় দেশের এই পতাকা বৈঠক আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
আমরা আশা করছি, রবিবার সকাল ১০টায় আমরা মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলকে ঘুমধুম মৈত্রী সেতু পয়েন্টে স্বাগত জানাতে পারবো। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হচ্ছেছ এই বৈঠক থেকেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দিনক্ষণ নির্ধারণে তারা সক্ষম হবেন।
এদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের এপারে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার নং ৪৭ ও ৪৮ এর মধ্যবর্তী তমব্রু খালের পাড়ে একাধিক বিশ্রামাগার ও ট্রানজিট ক্যাম্প স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন (আর আর সি)। প্রায় ৪০ ফুট প্রশস্ত তমব্রু খালের উপর স্থাপিত অস্থায়ী সেতুর উপর দিয়ে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যাবেন।
সীমান্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, তমব্রু খালের ওপারে মংডু জেলায় প্রথমে তাদের নিয়ে যাওয়া হবে। আর আর আরসি সূত্র জানায়, বিশ্রামাগার এবং ট্রানজিট ক্যাম্প স্থাপনের জন্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসনের কাছে ৩ একর ২০ শতক জমি চাওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে জায়গা প্রদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। সূত্রটি জানায়, বিশ্রামাগার ও ট্রানজিট ক্যাম্প নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়েছে।
রবিবারের বৈঠকের পর তারা দ্রুত এসব কাজ সম্পন্ন করে ফেলতে পারবেন। এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমেন শর্মা জানান, সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী প্রত্যাবাসন কাজে সহায়তা দেয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
উল্লেখ, ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সীমান্তের ওপারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী রোহিঙ্গা নাগরিকরা বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। আর আর সি অফিস সূত্র জানায়,
কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত আশ্রয় শিবিরগুলোতে বর্তমানে ৯ লাখ ৬১ হাজার ৭২৯ জন রোহিঙ্গা নাগরিক আশ্রয়ে রয়েছে। এর আগে বান্দরবানের ঘুমধুম ও তমব্রু সীমান্তে যেসব রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছিলো গত বছর তাদেরকেও কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়। পর্যায়ক্রমে সব রোহিঙ্গাকে তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে উদ্যোগ নিয়েছে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন।