যে কারণে পরিবার থেকে আলাদা হওয়ার প্মারবনতা বাড়ছে তরুণদের

প্রকাশকালঃ ০৬ জুন ২০২৪ ০৪:১০ অপরাহ্ণ ১৫৩ বার পঠিত
যে কারণে পরিবার থেকে আলাদা হওয়ার প্মারবনতা বাড়ছে তরুণদের

সময়ের সঙ্গে বদল এসেছে পারিবারিক কাঠামোতে। দেশ ভেদে পরিবারের কাঠামোর ভিন্নতা রয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে পরিবার থেকে তরুণদের আলাদা থাকার চর্চা নতুন কিছু নয়। বয়স ১৮ হলেই উন্নত দেশের তরুণতরুণীরা বাবা-মায়ের থেকে আলাদা থাকতে শুরু করে। তবে বর্তমান সময়ে কিছু দেশে এই প্রবণতা খুব বেড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে।

 

মার্কিন সংবাদ মাধ্যম কসমোপলিটনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বর্তমান সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ-তরুণীরা ১৮ হলেই বাবা-মায়ের থেকে দূরে থাকতে শুরু করেন। বিশেষ করে মিলেনিয়াল (যাদের জন্ম ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ সালের ভেতর) ও জেন-জিরা (যাদের জন্ম ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের ভেতর) অন্য প্রজন্মের তুলনায় এ ব্যাপারে বেশি এগিয়ে আছেন।

 

যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কার্ল পিলেমার একটি গবেষণা বলছে, ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণ মার্কিনদের ২৭ শতাংশ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। মাত্র ৫২ শতাংশ তরুণ বাবা ও মায়ের সঙ্গে থাকেন। ২১ শতাংশ থাকেন মা অথবা বাবার সঙ্গে। এর ভেতর আবার মায়ের সঙ্গে থাকেন প্রায় ১৮ শতাংশ; আর বাবার সঙ্গে থাকেন মাত্র ৩ শতাংশ। যে পরিবারগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে অন্য দেশে গিয়েছেন ওই পরিবারের তরুণদের মধ্যে বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কম।

 

যে কারণে পরিবার থেকে আলাদা মার্কিন তরুণরা

সময়ের সঙ্গে মানুষের অভ্যাসের পরিবর্তন এসেছে। আর সেই অভ্যাসের প্রভাবে পরিবারের কাঠামোতে পড়েছে। মার্কিন পরিবারগুলোতে দেখা যায় শিশুরা পরিবার থেকেই নেতিবাচক অভিজ্ঞতা নিয়ে বড় হচ্ছে। বাবা-মায়ের সম্পর্কের প্রভাবও পরে তাদের ওপর। এছাড়াও মা-বাবার সঙ্গে মতের অমিল হওয়া, মূল্যবোধ ও জীবনদর্শনে পার্থক্য থাকা, স্বাধীনতা, উচ্চশিক্ষা, পেশাজীবন ইত্যাদি পরিস্থিতি পারিবারিক বিচ্ছিন্নতার প্রধান কারণ। অন্যদিকে পরিবার নিয়ে নেতিবাচক ভাবনা বাড়ছে মার্কিন তরুণদের মাঝে।

 

দেশটিতে টিকটকে ‘টক্সিক ফ্যামিলি’ হ্যাশট্যাগ ছাড়িয়ে গেছে ২ বিলিয়ন। নিজেদের মত চলার জন্য তরুণেরা পারিবারিক বন্ধনে থাকতে চান না। মার্কিন তরুণদের অনেকের বাবা বা মা-ই নতুন করে দাম্পত্যজীবনে জড়িয়ে যান। সে অবস্থায় বাবা মায়েরাও চান সন্তান আলাদা থাকুক। মনোবিজ্ঞানী ও গবেষক কুইন্সি গিডনও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি এটাকে নেতিবাচক মনে করেন না।

 

তিনি বলেন, এমন অনেক তরুণের মানসিক সেবা দিয়েছেন তিনি যারা পরিবারের মাধ্যমে মারাত্মকভাবে মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত। মা-বাবার সংসারে অশান্তি, বিচ্ছেদ, বাবা বা মায়ের নতুন সঙ্গী, পারিবারিক চাপ এই সব পরিস্থিতি থেকে অনেকে ১৮ বছর পর্যন্তও অপেক্ষা করেন না। কুইন্সি বলেন, ভালো জীবনের আশায়, মানসিক স্থিরতার জন্য কেউ যদি পরিবার থেকে বেরিয়ে পড়ে, সেটাকে খারাপভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। বরং আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠার জন্য তাকে অভিনন্দন।