প্রকাশকালঃ
২৭ আগu ২০২৩ ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ ২০৮ বার পঠিত
ঘরোয়া আড্ডা কিংবা বন্ধু-মহলে চা একটি জনপ্রিয় পানীয়। আবার কর্মব্যস্ত পুরো দিনের ক্লান্তি দূর করতেও চায়ের বিকল্প নেই। তবে চা বা ব্ল্যাক টি’র তুলনায় গ্রিন টি স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী। গ্রিন টি’র উপকারিতা নিয়ে লিখেছেন শারমিন রহমান।
গ্রিন টি-তে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা সব দিক থেকে শরীরকে সতেজ করে। এটি রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গ্রিন টি’র পলিফেনল শরীরের ফ্যাট অক্সিডেশন প্রক্রিয়াকে আরো কার্যকর করে খাবার থেকে ক্যালরি তৈরির প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। ফলে দেহে অতিরিক্ত চর্বি জমতে পারে না। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এটি এক দিনে ৭০ ক্যালরি পর্যন্ত ফ্যাট বার্ন করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে বছরে ৭ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব।
গ্রিন টি রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গ্রিন টি প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করে। তাই এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খুবই কার্যকরী। হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রেও গ্রিন টি খুবই কার্যকরী। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গ্রিন টি শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, গ্রিন টি রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। পাশাপাশি, গ্রিন টি শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করে। ফলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।
দাঁত ভালো রাখতে হলে গ্রিন টি খেতে পারেন। কারণ, গ্রিন টির ক্যাটেকাইন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মুখের ভিতরের ব্যাকটেরিয়াকে বাড়তে দেয় না। যার ফলে গলার সংক্রমণসহ দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। নিয়মিত গ্রিন টি খেলে তা মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। অবসাদ বা ডিপ্রেশন দূর করতে গ্রিন টি খুবই কার্যকরী। চা পাতায় ‘থিয়ানিন’ নামের অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে। এই উপাদান অবসাদ কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে অবসাদ থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
এক কাপ কফির থেকে এক কাপ গ্রিন টি পান করা বেশি স্বাস্থ্যকর। কফির তুলনায় গ্রিন টিতে ক্যাফেইন কম থাকে, তবু তা শরীরের সতেজতা আনতে যথেষ্ট। আবার বেশি ক্যাফেইন অনেক সময় পানিশূন্য করে ফেলতে পারে। একজন মানুষের ওজন বাড়ে সাধারণত প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বেশি খাবার গ্রহণ ও পরিশ্রমহীন জীবনযাপনে। আর ওজন কমে প্রয়োজনীয় বা তার কম ক্যালোরি গ্রহণ অথবা ব্যায়াম করলে। গ্রিন টি সবসময় ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে এক দিনে ২-৩ কাপের বেশি পান করা এবং এর সঙ্গে গুঁড়া দুধ কিংবা চিনি মেশানো উচিত নয়।
গ্রিন টি পান করবেন কখন?
সকালের নাশতায় এমন খাবার খাওয়া উচিত, যা থেকে শরীর শক্তি পায়। খালি পেটে গ্রিন টি পান করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। তাই সকালের নাশতায় স্বাস্থ্যকর কোনো খাবার খেতে হবে। এরপর গ্রিন টি পান করুন।
রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে গ্রিন টি পান ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে অনেক সময় তা ঘুম নষ্ট করতে পারে, এ জন্য ঘুমানোর দুই ঘণ্টা আগেই গ্রিন টি পান করুন। এরপরও যদি ঘুমের সমস্যা হয়, তবে তা বাদ দিতে হবে এবং দিনের অন্য সময় তা পান করতে হবে।
ব্যায়াম করার আধা ঘণ্টা আগে গ্রিন টি পান করলে যেমন শরীরের মেটাবলিজম বাড়বে, তেমনি কর্মদক্ষতা বাড়বে। ফলে ওজন এবং মেদ কমাতে সাহায্য করবে।
অনেকেই খাবার খাওয়ার পরপরই চা পান করেন। খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রিন টি পান করা উচিত নয়। খাবার খাওয়ার কমপক্ষে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা আগে অথবা পরে গ্রিন টি পান করুন।
সাবধানতা
*সকালে খালি পেটে গ্রিন টি পান করা যাবে না।
*খাওয়ার পরপরই গ্রিন টি পান করা যাবে না।
*ঘুমের সমস্যা এড়াতে গভীর রাতে গ্রিন টি পান করা থেকে বিরত থাকুন।