জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে চলমান আন্দোলনের বিরোধিতা করেছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা। তারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, এমন পদক্ষেপ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাদের আশঙ্কা, আজ যদি চেয়ারম্যানকে অপসারণ করা হয়, তাহলে আগামীকালই অন্য কারো অপসারণ দাবি উঠতে পারে, যা অব্যাহত অস্থিরতা তৈরি করবে।
আজ শনিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে দেশের ১৩টি শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)। তিনি বলেন, “এনবিআরের চেয়ারম্যান অপসারণ কোনো ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে না। বরং তা সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলবে। দেশের স্বার্থে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “চলমান অচলাবস্থার কারণে প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এমন এক সময়ে, যখন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আন্তর্জাতিক বাজারে নানা চাপে রয়েছে, তখন এনবিআরের কার্যক্রমে অচলাবস্থা ব্যবসায়ীদের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন:
আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান
বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল
এলএফএমইএবি সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স সভাপতি কামরান টি রহমান
বিসিএমইএ সভাপতি মঈনুল ইসলাম
বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান
এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন
ট্রান্সকম গ্রুপ সিইও সিমিন রহমান
ঢাকা চেম্বার সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান, প্রমুখ।
ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, আজই প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নেতৃত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বিডার প্রতিনিধিদের নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। তারা আন্দোলনকারীদের প্রতি শর্তহীনভাবে কাজের জায়গায় ফিরে যাওয়ারও আহ্বান জানান।
আইসিসিবির সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, “সরকারের সঙ্গে বেসরকারি খাতের কার্যকর যোগাযোগ থাকা জরুরি। কিন্তু এখনকার সংলাপ প্রক্রিয়া অনেকটাই স্তিমিত। একজনের অপসারণের পর যদি আরেকজনেরও দাবি ওঠে, তাহলে এর শেষ কোথায়?”
এলএফএমইএবি সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, “ব্যবসায়ীরা এনবিআরের সংস্কার চায়, কিন্তু অনেক সৎ কর্মকর্তা আছেন, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এসব দিকও সরকারকে ভাবতে হবে।”
বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, “এক সময় এনবিআরের কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের হয়রানি করতেন, এখন নিজেরা সরকারকে অস্থির করে তুলেছেন। দেশের স্বার্থে সমস্যার দ্রুত সমাধান দরকার।”