রাজধানীর মিরপুরের একটি গির্জায় শিক্ষক সুব্রত বৈদ্য হত্যা মামলায় সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮-এর বিচারক মো. মঞ্জুরুল হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।
খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— রিপন দাস, শিমন শিকদার এবং প্রভুদান বাড়ৈ। এর মধ্যে প্রভুদান বাড়ৈ পলাতক, আর রিপন দাস ও শিমন শিকদারকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
ঘটনাটি ঘটে ২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর, যখন মিরপুরের মেথড লিস্ট চার্চে শিশুদের ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়ার পর সুব্রত বৈদ্য প্রেমিকা নীপা দাসের ডাকে ৪র্থ তলায় যান। কিছু সময় পর, নীপা দাস ফোন করে সুব্রতার পরিবারকে জানান যে, সুব্রত অসুস্থ। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নীপার পরিবার দাবি করে যে, সুব্রত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে ময়নাতদন্তে জানা যায়, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
সুব্রতের বোন, সুবর্ণা বৈদ্য প্রথমে দারুস সালাম থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর হত্যার মামলা করতে চাইলে পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে আদালতে মামলা করা হলে, আদালতের নির্দেশে থানায় মামলা রুজু করা হয়।
২০১৩ সালের ২৭ অক্টোবর, এসআই শাহিন মোহাম্মদ আমানুল্লাহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। কিন্তু বিচার চলাকালে নীপা দাস, তার বাবা নিবারণ দাস ও মা লিন্ডা দাস মারা যান, ফলে আদালত তাদের অব্যাহতি দেন।
১৩ বছর পর, প্রমাণের অভাবে সব আসামি বেকসুর খালাস হলেও, সুব্রতের পরিবার হতাশা প্রকাশ করেছে।
সুবর্ণা বৈদ্য বলেন, “আমার ভাই সুব্রত হত্যার ন্যায়বিচার পাইনি। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।”
স্থানীয়রা বলছেন, সুব্রতের অকালমৃত্যু এবং তার পরিবারের দীর্ঘ লড়াইয়ের চূড়ান্ত সমাধান যেন এখনও অপূরিত রয়ে গেল।