বাবা হারা তিন যমজ ভাই: চিকিৎসাশাস্ত্রে অধ্যয়নের সুযোগ
প্রকাশকালঃ
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৩:১৭ অপরাহ্ণ ২১১ বার পঠিত
বগুড়ার ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ি গ্রামের মৃত স্কুলশিক্ষক গোলাম মোস্তফার তিন ছেলে মফিউল হাসান, শাফিউল হাসান ও রাফিউল হাসান - যমজ তিন ভাই। একসাথে জন্মগ্রহণ, একসাথে বেড়ে ওঠা, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে পড়েছেন একই প্রতিষ্ঠানে। সবক্ষেত্রে তিনজনের ফলাফলও একই।
এবার এই তিন ভাই চিকিৎসাশাস্ত্রে অধ্যয়নের সুযোগ পেয়েছে। তবে আলাদা প্রতিষ্ঠানে। মফিউল হাসান গত বছর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। আর এই বছর শাফিউল হাসান দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও রাফিউল হাসান নোয়াখালী আব্দুল মালেক মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।
মাত্র ছয় বছর বয়সে তাদের বাবাকে হারানোর পর তাদের মা আর্জিনা বেগম কৃষি জমিতে আবাদ করে ছেলেদের পড়াশোনা করিয়েছেন। এমনকি তাদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করতে মা আর্জিনা প্রায় চার বিঘা জমি বিক্রি করেছেন।
২০২০ সালে ধুনট সরকারি নইম উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। এরপর বগুড়া সরকারি শাহ সুলতাল কলেজ থেকে ২০২২ সালে জিপি-এ ৫ পেয়ে এইচএসসিতে উত্তীর্ণ হন। তিন সহোদরের অভাবনীয় সাফল্যে শুধু বথুয়াড়ী গ্রাম নয়, গোটা উপজেলায় যেন আনন্দের জোয়ার বইছে। ছেলেদের সাফল্য নিয়ে কথা হয় যমজ তিন ভাইয়ের রত্নাগর্ভা মা আরজিনা বেগমের সঙ্গে।
আর্জিনা বেগম জানান, তার স্বামী মারা যাওয়ার পর তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তিনি অকূল পাথারে পড়েন। পরে অনেক ভেবেচিন্তে স্বামীর জমিজমা বন্ধক রেখে ছেলেদের পড়ালেখার প্রতি মনোযোগী হন। মেয়ে মৌসুমী বগুড়া সরকারি আজিযুল হক কলেজে স্নাতকে অধ্যয়নরত।
আর্জিনা বেগম বলেন, 'আমার জমি না হয় শেষ হয়েছে তবুও এতিম ছেলে ও মেয়ে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার রাস্তায় দিয়েছি।' তবে অভাব-অনটনের সংসারে মেয়ে মৌসুমীকে কীভাবে বিয়ে দেবেন এবং যমজ তিন ছেলের লেখাপড়ার খরচ কীভাবে বহন করবেন সেই চিন্তা তাড়া করে ফিরছে রত্নগর্ভা এ মায়ের।