ঢাকা প্রেস নিউজ
দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই) ২০২৪-এ বাংলাদেশ দুই ধাপ পিছিয়ে ১৫১তম অবস্থানে নেমে এসেছে। গত বছর এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৯তম।
বার্লিনভিত্তিক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) পরিচালিত সিপিআই ২০২৪-এর বৈশ্বিক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। মঙ্গলবার ঢাকার ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
টিআই-এর দুর্নীতির ধারণা সূচক ০ থেকে ১০০ স্কেলে নির্ধারিত হয়, যেখানে ‘০’ সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত এবং ‘১০০’ সর্বাধিক সুশাসিত হিসেবে বিবেচিত। চলতি বছরে বাংলাদেশ ২৩ স্কোর অর্জন করেছে, যা গত বছরের তুলনায় এক পয়েন্ট কম (২০২৩ সালে ২৪)। সমান স্কোর নিয়ে বাংলাদেশ, কঙ্গো ও ইরান একই অবস্থানে রয়েছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান জানান, ২০১২ সালের পর এবার বাংলাদেশ সর্বনিম্ন স্কোর অর্জন করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু ভুটান ব্যতিক্রম, যেটির স্কোর ৭২ এবং অবস্থান ১৮তম। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের নিচে কেবল আফগানিস্তান রয়েছে। বিশ্বব্যাপী গড় স্কোর ৪৩-এর তুলনায় বাংলাদেশের স্কোর ২০ পয়েন্ট কম, যা দেশটিকে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
তিনি আরও বলেন, কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা, দুর্নীতি প্রতিরোধকারী সংস্থাগুলোর রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্নীতিবাজদের পুরস্কৃত করার প্রবণতা ইত্যাদি কারণে সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান অবনমিত হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় দখলদারি ও চাঁদাবাজি অব্যাহত রয়েছে, যদিও কেবল ব্যক্তিরা পরিবর্তিত হয়েছে। তবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বড় দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে, এখন দেখার বিষয় তারা কতটুকু সফল হয়।
সূচকের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ১৩ বছরে ২০২৪ সালে বাংলাদেশের স্কোর সর্বনিম্ন। ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশের স্কোর ২৫ থেকে ২৮-এর মধ্যে ওঠানামা করছিল। ২০২৩ সালে এটি এক পয়েন্ট কমে ২৪ হয় এবং ২০২৪ সালে আরও এক পয়েন্ট কমে ২৩-এ নেমে আসে।
এছাড়াও, বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ যেসব দেশে চলে যায়, সেই দেশগুলোর মধ্যে দুর্নীতি কম এমন দেশগুলোর অবস্থান উচ্চস্থানে রয়েছে। যেমন, সিঙ্গাপুর ৮৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়, সুইজারল্যান্ড ৮১ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম, অস্ট্রেলিয়া ১০তম, কানাডা ১৫তম, হংকং ১৭তম, যুক্তরাজ্য ২০তম, সংযুক্ত আরব আমিরাত ২৩তম এবং যুক্তরাষ্ট্র ২৫তম স্থানে রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের এবং পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
