সৎ ব্যবসায়ীর পাঁচ বৈশিষ্ট্য

প্রকাশকালঃ ১১ মে ২০২৩ ১২:২১ অপরাহ্ণ ২২৩ বার পঠিত
সৎ ব্যবসায়ীর পাঁচ বৈশিষ্ট্য

সলাম মুসলমানকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে নৈতিকতা ও শিষ্টাচার অবলম্বন করতে বলেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যও এর ব্যতিক্রম নয়। একজন মুমিন ব্যবসায়ী সততা ও নৈতিকতায় অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত হবেন এটাই তাঁর ঈমানের দাবি। ব্যবসায়ে নৈতিকতা ও উত্তম শিষ্টাচার হলো, লেনদেনের ক্ষেত্রে উদারতা ও কোমলতা প্রকাশ করা, চারিত্রিক গুণাবলি রক্ষা করা, দাবি আদায়ের জন্য সাধারণ মানুষের ওপর কোনো রকম সংকীর্ণতা, কষ্ট বা সংকট চাপিয়ে না দেওয়া ইত্যাদি। ব্যবসায়ীদের নীতি-নৈতিকতা বিষয়ে অসংখ্য হাদিস রয়েছে। যার কয়েকটি নিম্নে বর্ণনা করা হলো।

১. লেনদেনে সহজ হওয়া : মুমিন ব্যবসায়ী লেনদেন ও পাওনা আদায়ে সহজ হবে। কঠোরকতা পরিহার করবে। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ সে ব্যক্তির প্রতি অনুগ্রহ করুন যে বেচাকেনা ও পাওনা ফেরত চাওয়ার সময় নম্রতা অবলম্বন করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০৭৬)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের পূর্ববর্তী জাতির একজন লোককে আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন, যে বেচাকেনার সময় ও পাওনা চাওয়ার সময় সহজতা অবম্বন করত।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৩২০)


২. সন্দেহজনক বিষয় পরিহার : ব্যবসা-বাণিজ্যে যাবতীয় সন্দেহপূর্ণ বিষয় বর্জন করা মুমিন ব্যবসায়ীর নৈতিক দায়িত্ব। সুতরাং যে বাজারে হালাল পণ্যের সঙ্গে হারাম পণ্যের মিশ্রণ ঘটানো হয় সে বাজারে বেচাকেনা করা অথবা এমন কারো সঙ্গে লেনদেন করা যার বেশির ভাগ পণ্যই হারাম—এমন ব্যক্তি ও বাজার পরিহার করতে হবে। কেননা উভয় ক্ষেত্রে সন্দেহ রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হালাল সুস্পষ্ট, হারামও সুস্পষ্ট এবং এই দুইয়ের মধ্যে আছে অনেক সন্দেহজনক বিষয়। তা হালাল না হারামের অন্তর্ভুক্ত সেটা অনেক লোকই জানে না। যে ব্যক্তি এই সন্দেহজনক বিষয়গুলো ত্যাগ করবে সে তার নিজ দ্বিন এবং মান-সম্মানেরই সংরক্ষণ করবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪৫)

৩. সততার সঙ্গে ব্যবসা করা : ব্যবসায়ীর জন্য ব্যবসায়ে সততা, সত্যবাদিতা ও আমানতদারি অবলম্বন করা আবশ্যক। কেননা এর ওপর তার পরকালীন মুক্তি নির্ভর করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পরম বিশ্বস্ত ও সত্ব্যবসায়ী (পরকালে) নবী, সিদ্দিক ও শহীদদের সঙ্গে থাকবেন।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১২০৯)

৪. দান-সদকা করা : ব্যবসার পণ্য থেকে কিছু দান-সদকা করা মুমিন ব্যবসায়ীর বৈশিষ্ট্য। মহানবী (সা.) এ বিষয়ে উৎসাহিত করে বলেন, ‘ব্যাবসায়িক লেনদেনের সময় শয়তান ও গুনাহ এসে উপস্থিত হয়। অতএব তোমরা ব্যবসায়ের সঙ্গে দান-খয়রাতও যুক্ত কোরো। কেননা দান প্রতিপালকের রাগ প্রশমিত করে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১২০৮)


৫. ব্যবসার কাজে সকালে যাওয়া : সকাল সকাল কাজে বের হওয়া ইসলামের শিক্ষা। ব্যবসায়ীও ব্যবসার কাজে সকালে বের হবে। কেননা রাসুলে আকরাম (সা.) উম্মতের সকালগুলো বরকতময় হওয়ার দোয়া করেছেন। তিনি দোয়া করেন, ‘হে আল্লাহ, আপনি আমার উম্মতের সকালগুলোতে বরকত দান করুন।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ২৬০৬)

হাদিস বর্ণনাকারী সাখার আল গামেদি (রা.) একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি তাঁর ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের দিনের প্রথমভাগে ব্যবসার কাজে পাঠাতেন। এতে তিনি ধনী হয়েছিলেন এবং তাঁর সম্পদও বৃদ্ধি পেয়েছিল।

আল্লাহ সবাইকে নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবসা করার তাওফিক দিন। আমিন