নাটোর প্রতিনিধি:-
নাটোরের গুরুদাসপুরে শিধুলী হাটের টাকা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে মাদরাসা কমিটি ও বিএনপি-সমর্থিত গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে মাদরাসা কমিটির আট সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত ও গ্রেপ্তার
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. রুবেল হাসানের দায়ের করা চাঁদাবাজির মামলার ভিত্তিতে শিধুলী হযরত ওসমান (র.) হাফেজিয়া ও কওমি মাদরাসা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেনসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিধুলী হাট সরকারি তালিকাভুক্ত না হওয়ায় কয়েক বছর ধরে এর আয় মাদরাসায় জমা পড়ে, যার মাধ্যমে প্রায় দেড়শ শিক্ষার্থীর দ্বীনি শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হয়।
বিক্ষোভ ও আল্টিমেটাম
পরদিন (১৬ এপ্রিল) সকাল থেকেই গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, হেফাজতে ইসলাম ও ওলামা পরিষদের নেতাকর্মীরা। বক্তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি না দিলে বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।
রাজনৈতিক বিরোধ ও প্রশাসনের ভূমিকা
মাদরাসার মহতামিম মো. ফাতিহুল কবীর জানান, তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ মেনে হাটের টাকা উত্তোলন বন্ধ করলেও, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতা আব্দুল আজিজের অনুসারীরা হাটের আয়ে ভাগ চাওয়ায় এ দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আজিজের ছেলে সোহাগ মাহমুদ দাবি করেন, হাটের টাকা নিয়ে বিএনপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। মামলার বাদী ছাত্রদলের সভাপতি রুবেল তাদের অনুসারী হলেও মামলার বিষয়ে দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নেই। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, মাদরাসা কমিটির সভাপতি আওয়ামী লীগপন্থী হওয়ায় পুরো বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
ছাত্রদল নেতা রুবেল হাসান বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শে তিনি হাট থেকে টাকা উত্তোলন বন্ধ রাখলেও মাদরাসা কমিটি তা অব্যাহত রাখে, যার ফলে বাধ্য হয়ে তিনি মামলা করেন।
প্রশাসনের বক্তব্য
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা আফরোজ জানান, শিধুলী হাট সরকারি পেরিফেরিতে না থাকায় সেখানে টাকা তোলার বৈধতা নেই। এ কারণে তিনি মাদরাসা কমিটিকে নিষেধ করেন।
গুরুদাসপুর থানার ওসি গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, হাটের টাকা তোলার বিষয়ে সেনাবাহিনীর কাছে মৌখিক অভিযোগ আসে। এরপর যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে আটজনকে গ্রেপ্তার করে।